পুঠিয়ায় স্কুল জাতীয়করণের নামে শিক্ষকদের কাছে প্রধান শিক্ষকের চাঁদাবাজি

পুঠিয়া প্রতিনিধি:

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা সদরে অবস্থিত পুঠিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয় জাতীয়করনের নামে শিক্ষকদের কাছে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে। স্কুল জাতীয়করণ করতে মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জনকে খরচ দেয়ার কথা বলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির অনুমতিক্রমে স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ চাঁদা আদায় করেন। বাদ যায়নি স্কুলের ক্যারানি থেকে শুরু করে পিয়ন পর্যন্ত তাদের কাছেও আদায় করা হয়েছে চাঁদার টাকা। শিক্ষদের কাছে ১০ হাজার ক্যারানি ও ল্যাব এসিস্টেন্ডের কাছে ৭ হাজার এবং পিয়নদের কাছে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়।

বিষয়টি গত ৭ ডিসেম্বর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে প্রকাশ হলে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির ওপর অনাস্থা জানিয়েছে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। জানা যায়, সরকার উপজেলা পর্যায়ে একটি করে স্কুল জাতীয়করনের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে। সে তালিকায় নাম রয়েছে ১৫২ বছরের ঐতিহ্যবাহী স্কুল পুঠিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের। এতেই স্কুল জাতীয়করনের বিভিন্ন খরচ দেখিয়ে শিক্ষকদের কাছে চাঁদা আদায় কারেছে প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার চৌধুরি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুঠিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, স্কুল জাতীয়করনের নামে বিভিন্ন খরচ বাবদ শিক্ষক প্রতি পর্যায়ক্রমে ১০ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়। এছাড়াও স্কুলের ক্যারানি ও পিয়নদের কাছে ৭ হাজার ও ৫ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়। এতোদিন বিষয়টি ধামাচাঁপা থাকলেও গত ৭ ডিসেম্বর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির মিটিংয়ে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি প্রকাশ প্রায়। এসময় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির অন্যন্ন সদস্যরা সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের ওপর অনাস্থা জানিয়ে এবং চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে নিন্দা জানিয়ে মিটিং থেকে উঠে আসে।

এসময় সদস্যদের পূনরায় মিটিংয়ে ফেরাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সভাপতি আবদুল মালেক ও প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার চৌধুরি। পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুল কমিটির সদস্য ও পুঠিয়া পৌর মেয়র রবিউল ইসলাম রবির কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্কুল জাতীয়করনে একটি টাকাও খরচ হয়নি অহেতুক সাধারন শিক্ষকদের কাছে টাকা উঠানো হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর চাঁদা আদায় করাকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের ওপর অনাস্থা জানিয়ে মিটিং না করার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন।

এব্যপারে জানতে স্কুল কমিটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবদুল মালেক চাঁদা তোলার অনুমতি দেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, স্কুলের শিক্ষকরা কি করেছে না করেছে সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমি দেখবো স্কুল ফান্ডের টাকা ঠিক আছে কিনা। চাঁদা আদায়ের ব্যপারে কিছু জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুল জাতীয়করনে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া লাগে তাই গাড়ি ভাড়া বাবদ শিক্ষকরা কিছু টাকা উঠিয়েছে বলে শুনেছি।

এব্যপারে জানতে পুঠিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার চৌধুরির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, শিক্ষরা তাদের এস্যোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যাতায়াত খরচ বাবদ সামান্য কিছু টাকা উঠিয়েছে তবে আমি কোন টাকা পয়সা নেইনি। চাঁদা উঠানোকে কেন্দ্র করে ম্যানেজিং কমিটির মিটিং হয়নি বলেও স্বীকার করেন তিনি।

টাকাটা কোথায় আছে জানতে চাইলে বলেন, তাদের সহকারী প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন। সহকারী প্রধান শিক্ষক শামীম রেজার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শিক্ষক এস্যোসিয়েশনের সভাপতি প্রধান শিক্ষক যাবতীয় হিসাব নিকাশ উনার কাছেই আছে।

 

স/আ