পুঠিয়ায় সোলার বিতরনে আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

পুঠিয়া প্রতিনিধি:
রাজশাহীর পুঠিয়ায় এক ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতির বিরুদ্ধে সরকারী সোলার বিতরনে অর্থ আদায়, অসচ্ছল ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে সচ্ছল ব্যক্তিকে সোলার প্রদান, সোলার প্রদানে স্বজনপ্রীতি ও একই পরিবারে একাধিক সোলার বিতরনের অভিযোগ উঠেছে। গত ৩০ মে ওই সভাপতির বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
অভিযুক্ত ওই নেতা হলেন, উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ও ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের রসুল প্রামানিকের ছেলে ফজলুর রহমান। ফজলুর রহমান জিউপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি পদেও রয়েছেন।
সংস্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের গত মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়ার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে টিআর কাবিখা প্রকল্পের আওতায় উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের দড়িদ্র অসহায় পরিবারের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩০ টি সোলার প্রদান করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান প্রতিটি সোলার প্রদান বাবদ এক এক জনের কাছে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। ৩০ টি সোলার বাবদ ১০ হাজার করে মোট ৩ লক্ষ টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে একই পরিবারে একাধিক সোলার প্রদান এবং সোলার বিতরনে প্রকৃত দরিদ্র ও অসহায় পরিবারকে বাদ দিয়ে নিজের আত্মীয়-স্বজনের নামে সোলার দেয়া হয়েছে। এতে ইউনিয়ন জুড়ে সাধারন মানুষের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ অনিয়মের ব্যপারে গত ৩০ শে মে ইউনিয়নের হানিফ নামের এক ব্যক্তি এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড মধুখালি গ্রামের আলী শাহ্’র দুই ছেলে খাদেম ও আকবর, সুরুজ বেপারীর তিন ছেলে ইয়াকুব, হাসেম ও হাকিম, হজ মিয়ার দুই ছেলে মহসিন ও মাহাবুল, দেদার বক্সের ছেলে মামুন ও মাসুদ, ইয়াছিন আলীর ছেলে আলমগীর এবং সৈয়দপুর গ্রামের বহুতল ভবনের মালিক ময়না খাতুন এছাড়াও সভাপতি ফজলুর রহমানের আত্মীয় দেছের আলী, মেছের আলী ও রমজান আলীকে সোলার প্রদান করা হয়েছে। যারা সবাই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল।
এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, যাদের সোলার নেয়ার টাকা আছে, বাড়িতে বিদ্যুৎ আছে এমনকি নিজে কেনার মত সামর্থ্য আছে তাদের বাড়িতেই ২/৩ জন করে সোলার পাচ্ছে। অথচ যাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই টাকা দিতে পারেনা তারা সোলার পায় না।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, এটা সহ আরো কয়েকটি বিষয় তদন্ত করতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযোগ কারী ব্যক্তি বলেন, আমরা জানতাম না সোলার নিতে টাকা লাগেনা, না জেনে আমরা টাকা দিয়েছি। পরে বিষয়টি জানতে পেরে আমরা অভিযোগ করেছি। তবে অভিযোগ তুলে নিতে আমাদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে কেও তদন্ত করতে আসলে টাকা দেয়ার কথা বললে বাড়িতে লাগানো সোলার খুলে নেয়া হবে। তখন টাকাও যাবে সোলারও যাবে। এমনকি পরিবারের যে কারো যে কোন ক্ষতি করতে পারে ভেবে কেও মুখ খুলছে না।
এব্যপারে জানতে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ফজলুর রহমানের মোবাইলফোনে কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তদন্ত কর্মকর্তা পিআইও সালাউদ্দিন আল ওয়াদুদ বলেন, এব্যপারে প্রাথমিক তদন্ত করে ঘটনার আংশিক সত্যতা পাওয়া গেছে। আগামী ১২ জুন তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তিনি বলেন, মূলত সকল সরকারী সহযোগীতা অসহায়-দরিদ্র মানুষদের জন্য সমাজের স্বচ্ছল ব্যাক্তিদের জন্য নয়। ইউএনও আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, তদন্ত রিপোর্ট পেলে তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স/শা