পুঠিয়ায় শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণায় রহস্য

পুঠিয়া প্রতিনিধি:

রাজশাহীর পুঠিয়ায় জেলা সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২৪ এপ্রিল। তবে রহস্যজনকভাবে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাতে।

সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক সম্পাদক পদে জটিলতা থাকায় ভোটগ্রহনের একদিন পর ভোট পুন:গণনার মাধ্যমে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে ১১টি পদে মোট ৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। আর সর্বমোট ভোটার রয়েছেন এক হাজার ৪২৮ জন।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আবদুর রহমান পটল ভোটগ্রহণের পর প্রথম দফা ভোট গণনা হলে ফলাফল ঘোষণার আগেই ভোট পুন:গণনার আবেদন করেন। এতে নির্বাচন কমিশন প্রথম দফায় সাধারণ সম্পাদক সহ দুটি পদ বাকি রেখে সবগুলো পদের ফলাফল ঘোষণা করেন। এতে সভাপতি পদে বিজয়ী হয়েছে লুৎফর রহমান ও ভোট পুন:গণনায় সাধারণ সম্পাদক পদে বিজয়ী হয়েছেন আবদুর রহমান পটল।

অভিযোগ রয়েছে, প্রথম দফা ভোট গণনায় সাধারন সম্পাদক পার্থী আবদুর রহমান পটলের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নুরুল ইসলাম প্রায় শতাধিক ভোটে এগিয়ে ছিলেন। যদিও প্রথম দফায় এই পদের ফলাফল ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন।

শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত গত ২৪ এপ্রিল ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের যথা সময়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট গ্রহণ ও গণনা শেষে সাধারণ সম্পাদক পদের ফলাফল নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এতে করে নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রাখে।

নির্বাচন কমিশনার অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক জানান, ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণার সময় সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আব্দুর রহমান পটল ভোট পুন:গণনার আবেদন করেন।

এরপর সড়ক সম্পাদক পদের একজন প্রার্থীও পুনরায় ভোট গণনার আবেন করেন। এতে করে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সকলের মতামতে ওই রাতে ফলাফল স্থগিত রাখা হয়। পরে ২৫ এপ্রিল বিকেলে ওই দুটি পদে পুনরায় ভোট গণনা শেষে চুড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে । এতে সাধারণ সম্পাদক পদে আবদুর রহমান পটল পেয়েছেন ৬১০ ভোট ও তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নুরুল ইসলাম পেয়েছেন ৫৮৪ ভোট এবং সড়ক সম্পাদক পদে শহিদুল ইসলাম ৬০৮ ভোট ও প্রতিদ্বন্দ্ববি প্রার্থী শুকুর আলী পেয়েছেন ৫১৭ ভোট।

নির্বাচন কমিশন জানায়, স্থগিত রাখার পর থেকে পুন:গণনার শেষে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত সবকিছু প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে ছিলো। সেখানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুঠিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, থানার অফিসার ইনচার্জ ছাড়াও রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নরুল ইসলাম বলেন, প্রথম দফা ভোট গণনার পর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর চেয়ে প্রায় শাতিধিক ভোটে এগিয়ে ছিলাম। এর পরেই আমার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আবদুর রহমান পটল ও তার সমর্থকরা ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রাখতে নির্বাচন কমিশনকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। পরে ভোট পুন:গণনায় আমাকে জোরপূর্বক পরাজিত করা হয়েছে।

তবে বিজয়ী প্রার্থী আব্দুর রহমান পটল মুঠোফোনে বৃহস্পতিবার দুপুরে জানান, ভোট গণনায় অনিয়মের আশঙ্কায় তিনি ভোট পুন:গণনার আবেদন করেই নাটোর চলে যান। তবে রাতে ফলাফল ঘোষণার পর তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকিল উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে শ্রমিক ইউনিয়নে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছিলো।

স/আর