পুঠিয়ায় শিশুর সামনে মায়ের মুখে আগুন দেয়া সেই নাইম

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বোরখা পরে প্রেমিকা জেরিন আক্তার মিলির মুখে আগুন দেয়ার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে প্রেমিক নাইম ইসলাম। এর আগে ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীর পুঠিয়ায় বানেশ্বরে চার বছরের শিশুর সামনে মিলির মুখে আগুন দেয় নাইম।

নাইম ঢাকার ধামরাই থানার আইনগঞ্জের বাসিন্দা হাসান আলীর ছেলে নাইম ইসলাম (২৩)। এছাড়া ধামরাই কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের (সম্মান) শেষ বর্ষের ছাত্র।

বর্তমানে পোড়া মুখ নিয়ে প্রেমিকা জেরিন আক্তার মিলি এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। জেরিন আক্তার রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের পরিক্ষা দিয়েছেন। স্বামী-সন্তানের সঙ্গে পুঠিয়ার বানেশ্বরে থাকেন তিনি।

পিবিআইয়ের প্রধান কার্যালয়ের বিশেষায়িত একটি দলের সহায়তায় শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ধামরাইয়ের বাড়ি থেকে নাইমকে গ্রেফতার করে রাজশাহী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনও-পিবিআই। পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকিল উদ্দিন আহমেদ গ্রেফতারের বিষয়েটি নিশ্চিত করে বলেন, আদলাতে পাঠানো হবে।

অন্যদিকে, এ মামলার তদন্ত করছেন পুঠিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মহিনুল ইসলাম। পাশাপাশি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনও (পিবিআই) মামলাটির ছায়া তদন্ত করছিল। নাইমের বরাত দিয়ে এসআই মহিদুল ইসলাম জানান, জেরিন আক্তার মিলির স্বামী মিজানুর রহমান একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। পাঁচ বছর আগে তিনি ঢাকায় ছিলেন।

তখন স্বামীর সঙ্গে জেরিন আক্তার মিলি ঢাকায় থাকতেন এবং ইডেন কলেজে অনার্সে পড়তেন। এ সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় ধামরাই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র নাইমের সঙ্গে। দীর্ঘদিনের কথাবার্তার একপর্যায়ে প্রেম হয়ে যায়। স্বামীর অজান্তে নাইমের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতেন জেরিন আক্তার মিলি। এরই মধ্যে তিনি একটি সন্তানের জন্ম দেন। প্রায় তিন বছর আগে মিজানুর তার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে পুঠিয়ার বানেশ্বরে চলে আসেন। তবুও নাইমের সঙ্গে তার যোগাযোগ থাকে। গেল বছরের নভেম্বরে নাইম বানেশ্বর থেকে ঘুরে যান। তবে এসবের কিছুই জানতেন না জেরিনের স্বামী।

নাইম পিবিআইকে জানিয়েছেন, জেরিন আক্তার মিলি তার প্রথম প্রেম। বয়সে বড় হলেও স্বামী-সন্তান রেখে পালিয়ে এসে তাকে বিয়ে করার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু জেরিন রাজি না হয়ে ফেসবুকে ব্লক করে ও ফোনকল ধরাও বন্ধ করে দেন। তখন নাইম জানতে পারেন, আরও কয়েকজন ছেলের সঙ্গে জেরিনের সম্পর্ক রয়েছে। এই ক্ষোভ থেকে মুখে আগুন দেয়ার সিদ্ধান্তে ২৮ জানুয়ারি ঢাকা থেকে এসে বানেশ্বরে হোটেল রূপসার ২২ নম্বর কক্ষে ওঠেন। সঙ্গে বান্ধবীর বোরকা নিয়ে। ওইদিন সন্ধ্যায় দুই বোতল অকটেন কেনেন।

ঘটনার দিন ভোরে মিলির বাড়ির পাসে ওঁৎ পেতে থাকেন। মিলি শিশু সন্তানকে স্কুলের জন্য নিয়ে বের হলে পথ রোধ করে নাইম। সঙ্গে থাকা মশালে অকটেন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে সেটি তার মুখে আঘাত করে পালিয়ে যান। মশালের আগুনে মুখ ঝলসে যায়। জেরিন আক্তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা আগুন নেভিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় মামলা করেন তার ভাই জিসান হোসেন।

রাজশাহী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আবুল কালাম আজাদ জানান, বোরকা পরে আক্রমণ করায় এ ঘটনার কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। তারা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নাইমকে শনাক্ত করেন। তিনি সব স্বীকার করেছেন।

আরো পড়ুন…

https://silkcitynews.com/278729

 

স/আ