পুঠিয়ায় ছিনতাইয়ের অভিযোগ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে

পুঠিয়া প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর পুঠিয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে কাঁচামাল ব্যবসায়ীর প্রায় দেড় লক্ষ নগদ টাকা ও চেক বই ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ছাত্রদল নেতাসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী নিজেই। তবে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মারপিট করার কথা স্বীকার করলেও ছিনতাইয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
গত (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধা সাড়ে ৭ টার দিকে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক সংলগ্ন বিড়ালদহ মাইপাড়া বাজারে অবস্থিত মেসার্স ‘কেয়া এন্টার প্রাইজ, নামের কাঁচামালের আড়তে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যবসায়ী কামাল হোসেন ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক এবং অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিন (২৭) উপজেলার বিড়ালদহ মাইপাড়া এলাকার শাহাজাহান আলীর ছেলে ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি। তার পদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই কমিটির সভাপতি ওয়াসিম।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গত (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধা রাতে ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিন সহ ৪ জন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র হাতে কামাল হোসেনের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে এসে তাকে গালিগালাজ করতে থাকে। কামাল হোসেন এর প্রতিবাদ করলে লাঠিসোটা দিয়ে তাকে এলোপাথারি মারধর করে। পরে তার ব্যবসায়ীক ১ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে কামাল হোসেন তাদের ফের বাঁধা দেয়। পরে তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্র হাসুয়া দিয়ে কামাল হোসেনের পিঠে আঘাত করে এবং হাতুড়ি দিয়ে চোখের কোনায় আঘাত করে।
আহত কামাল হোসেন বলেন, যে সময় তারা আমার ওপর হামলা চালায় সে সময় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিলো। আড়তের কর্মচারীরাও বাসায় চলে যায় এবং বাজারে লোকজনও কম ছিলো। আমি একাই আড়তে টাকা পয়সা গুছিয়ে বাসায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেই সুযোগে তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ওপর হামলা চালিয়ে আমাকে আহত করে টাকা পয়সা ব্যাংক চেক ছিনিয়ে নিয়েছে। তাদেরও বাজারে আড়ত আছে তারাও আমার কাছে মাল বিক্রি করতো তবে তাদের সাথে কোন দ্বন্দ্ব ছিলোনা আমার। পরে আমার অত্মচিৎকারে বাজারের লোকজন ভিজতে ভিজতে এসে আমাকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করে। তারাও দ্রুত পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ওই এলাকার বাসিন্দা মেহেদী দাম জানান, কামাল হোসেনের সাথে ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিনের চাচা শরিফুল ইসলামের ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। কারন তাদেরও বাজারে আড়ত আছে। তবে ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব আছে কিনা তিনি জানেন না। সালাউদ্দিনসহ তারা কয়েকজন কামালকে মারধর করায় তার চিৎকার শুনে এসে অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে তার হাসপাতালে নিয়ে যান।
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সালাউদ্দিন নেতা হওয়ার পর থেকেই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছে। বর্তমানে তার দল ক্ষমতায় না থাকলেও ক্ষমতাসিন দল আ.লীগের স্থানীয় এক শীর্ষ নেতার আশ্রয় প্রশ্রয়ে তার আধিপত্য ধরে রেখেছেন। সামান্য বিষয়েও যাকে তাকে মারতে চলে আসে। রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত বিএনপির  বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে সে এলাকার যুবক ছেলেদের বৃষ্টির মধ্যেও সমাবেশে যেতে বাদ্ধ করেছিলো।
তবে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা সালাউদ্দিন  মুঠোফোনে বলেন, ব্যবসায়ীক বিষয় নিয়ে কথা বলতে আমার চাচা তার আড়তে গেলে উনি আমার চাচাকে থাপ্পর মারেন পরে আমরা গিয়ে তাকে মেরেছি। তবে টাকা পয়সা, চেক বই নেয়া এসব অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
এবিষয়ে থানার ওসি রেজাউল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।  তবে এখনও অভিযোগ মামলা আকারে রেকর্ড করা হয়নি। তবে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে যেহেতু জখম হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযোগটি মামলা আকারে রেকর্ড করা হবে।