পুঠিয়ায় বাদীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ

পুঠিয়া প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর পুঠিয়ায় হত্যা মামলার বাদীর পরিবারকে হয়রানি করতে মিথ্যা মাছ চুরির মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে হত্যা মামলার প্রধান আসামীর বিরুদ্ধে। গত ২৯ আগষ্ট রাজশাহীর বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে ৩০ মন মাছ চুরির অভিযোগ এনে হত্যা মামলার বাদীর ভাই শফিকুল ইসলাম সহ ৮ জনকে দায়ী করে শান মোহম্মদ কালু মামলাটি দায়ের করেন।
শান মোহাম্মদ কালু শফিকুল ইসলামের ভাগনে রকি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামী। তিনি বর্তমানে হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন। হত্যা মামলার আসামী কালু মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করেছেন, গত ২৬ আগষ্ট রাত্রী আনুমানিক ১ টার দিকে শফিকুল ইসলামসহ আরো ৭ জন ব্যক্তি দেশিয় অস্ত্র হাতে তার তপশীল বর্ণিত পুকুরে অনাধিকার ভাবে প্রবেশ করে ২ থেকে ৩ কেজি ওজনের অন্তত ৩০ মণ মাছ ও ৪ থেকে ৫ মণ ছোট মাছ মেরে তিনটি নসিমন যোগে চুরি করে নিয়ে যায়।
তিনি উল্লেখ করেছেন, ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন এবং মাছ মারতে বাঁধাও দিয়েছেন। কিন্তু আসামীদের ভয়ে কিছু বলতে সাহস পাননি। অভিযোগে উল্লেখ করা পুকুরটি থেকে ৩’শ ফিট দুরে অবস্থিত স্থানীয় বাসিন্দা মাছেম হোসেনের ছেলে মিলন হোসেন বলেন, এধরনের ঘটনা ঘটেনি। মাছ চুরির ঘটনা ঘটলে আমরা অবশ্যই টের পেতাম। তৎক্ষনাত টের না পেলেও পরের দিন সকালে অবশ্যই জানতে পারতাম।
তিনি আরো বলেন, পুকুর খনন করা হয়েছে মাত্র ৫ মাস হলো এরই মধ্যে এই পুকুরে ২ থেকে ৩ কেজি ওজনের মাছ কোত্থেকে আসবে ? পুকুরটি এখনও ভালোমতো খনন করায় হয়নি।
পুকুরটি থেকে সাড়ে ৩’শ ফিট দুরের আরেক বাসিন্দা ঝড়– জানান, এই প্রথম শুনলাম আপনার কাছে এই পুকুরের মাছ চুরির ঘটনা ঘটেছে। আগে কোন দিন এমন ঘটনার কথা শুনতে পাইনি। যদি পুকুরে মাছ চুরির ঘটনা ঘটতো তাহলে আমরা অবশ্যই জানতে পারতাম। তিনি বলেন, আসলে এধরনের ঘটনা ঘটেইনি। তবে তাদের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলছে সে কারনে মিথ্যা অভিযোগ করতে পারে বলেও জানান স্থানীয় এ বাসিন্দা।
জানা গেছে, অভিযোগকারী কালুসহ তার মনোনীত সাক্ষীগুলোও হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। এব্যাপারে অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৫ জুন রাতে আমার ভাগনে রকিকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে কালু ও তার সহযোগীরা খুন করেছে। এঘটনায় আমার বোন রেহেনা খাতুন বাদী হয়ে শান মোহাম্মদ কালুসহ তার সহযোগী ১৪ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় তারা গ্রেফতার হয়ে এখন জেল হাজতে অবস্থান করছে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বিভিন্নভাবে আমার পরিবারের লোকজনকে ফাঁসাতে মিথ্যা অভিযোগ করেছে। হত্যা মামলায় যারা সাক্ষী হয়েছে তাদেরও হুমকি ধামকি এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। মামলার বাদী শান মোহাম্মদ কালু শফিকুলের বোনের দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে অবস্থান করায় তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য যে, গত ৫ জুন শফিকুল ইসলামের ভাগ্নে ট্রাকের হেলপার রকি আহম্মেদের (২২) অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ময়নাতন্তের জন্য রকির লাশ রামেক হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রির্পোটে রকির শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহৃ পেয়ে ডাক্তার রিপোর্ট দিলে মৃত রকির মা রেহেনা খাতুন আদালতে হত্যার অভিযোগ দায়ের করেন।
আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে হত্যা মামলা রেকর্ড করে তার তদন্তের নির্দেশ দেন পুঠিয়া থানা পুলিশকে। তবে মামলার ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।

স/আন