পুঠিয়ায় আড়াই লাখ টাকার স্বর্ণের বালা ফেরত দিয়ে প্রশংসায় ভাসছে তারা

মইদুল ইসলাম মধু, পুঠিয়া:

রাজশাহীর পুঠিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষার্থী প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা সমমুল্যের দু’জোড়া স্বর্ণের বালা কুড়িয়ে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ফেরত দিয়েছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষও খোঁজ করে বালাগুলো প্রকৃত ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে ওই তিন শিক্ষার্থী প্রশংসায় ভাসছে।

আজ (১৪ ডিসেম্বর) শনিবার দুপুরে পুঠিয়া সদর এলাকায় অবস্থিত পুঠিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এমন ঘটনা ঘটে।

সততার এমন দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী তিন শিক্ষার্থী হলেন সাদিয়া ইসলাম, মেঘলা খাতুন ও সানজিদা আক্তার। তারা তিনজনই পুঠিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল বিভাগের ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, স্বর্ণের বালাগুলো তারা স্কুলের ভেতরে থাকা জুতোর মধ্যে থেকে পেয়েছে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শারীরীক কসরতের অনুশীলন করতে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জুতো জোড়া বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে এনে রেখেছিলো কিন্তু জুতোর ভেতরে যে স্বর্ণের বালা ছিলো সেটা সে আগে থেকে জানতো না।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পল্লব কুমার জানান, প্রতিবারের ন্যায় মহান বিজয় দিবসের মার্চপাষ্ট এবং ডিসপ্লে পরিবেশনের জন্য বিদ্যালয়ের প্রায় ১১০ জন শিক্ষার্থী প্রস্তুতি নিচ্ছে । এদের মধ্যে ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী অংকিতা গত শুক্রবার বাড়ি থেকে নাচের অনুশীলনের জন্য জুতো জোরা ছাড়াও কিছু সরঞ্জাম নিয়ে এসে স্কুলে রেখে দেয়।

তিনি জানান, আজ শনিবার দুপুরে এই তিনজন শিক্ষার্থী অনুশীলনের জন্য তার জুতো জোড়া ব্যবহার করতে গিয়ে জুতোর ভেতর দু’জোড়া স্বর্ণের বালা পেয়ে শিক্ষকদের কাছে জমা দেয়। আর জুতোর ভেতরে যে স্বর্ণের বালা রাখা ছিলো সেটা অংকিতাও আগে থেকে জানতো না। পরে অংকিতার বাবা দেব দুলালকে ফোন করে বিষয়টি জানালে তারা শুনে হতভম্ব হয়ে যান এবং সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ে ছুটে এলে বালাগুলো তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বালা জোড়া প্রায় সাড়ে ৪ ভরি স্বর্ণের যার বর্তমান বাজার মুল্য আড়াই লক্ষ টাকা।

বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মাজহারুল ইসলাম মিন্টু বলেন, তারা বালাগুলো যে স্বর্ণের সেটা দেখেই চিনতে পেরেছে। ইচ্ছে করলে তারা এগুলো ফেরত নাও দিতে পারতো। কিন্তু তারা সেটা না করে ফেরত দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এমন শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হতে পেরে গর্বে বুকটা ভরে গেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরাও তাদের প্রশংসা করছে বলেও জানান তিনি।

স/অ