পাল্টপাল্টি নির্মাণ হচ্ছে মসজিদ

পুঠিয়া ইউএনও’র বাসার সামনে পানি নিস্কাশনের ড্রেন বন্ধ করে মার্কেট বাণিজ্য

পুঠিয়া প্রতিনিধি :
রাজশাহীর পুঠিয়ায় নবনির্মিত উপজেলা মডেল মসজিদের ৫০ গজ দুরে জেলা পরিষদের জায়গার পানি নিস্কাশনের ড্রেনের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে আরেকটি মসজিদ। আর মডেল মসজিদকে অবজ্ঞা করে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ শুরু হওয়ায় এলাকাজুড়ে নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, একটি প্রভাবশালী মহল মসজিদের নাম দিয়ে মূলত সেখানে কোটি টাকার মার্কেট বিক্রি করতে ক্ষমতার প্রভাব খাটাচ্ছেন। তবে মসজিদ নির্মাণের সংশ্লিষ্ঠরা বলছেন, মডেল মসজিদ মহাসড়কে উত্তর পাশে হয়েছে। আর কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে দক্ষিনে।

নির্মানাধিন মসজিদের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসমতদৌলা বলেন, বিগত সময়ে এখানে মসজিদ নির্মাণ করতে জেলা পরিষদ কিছু জমি দান করেছে। আর সেই জায়গায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে ৪ তলা কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মাণ করা হবে। যার নিচে হবে বানিজৈক মার্কেট ও উপরে নামাজের স্থান। তিনি বলেন, নিচে মার্কেটের জন্য ১৯টি দোকান করা হবে। প্রতিটি ঘর ১০ থেকে ১২ লাখ টাকায় বিক্রি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।

এখন সেই টাকায় মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। লোকমূখে সমালোচনা হচ্ছে ৫০ গজ দুরে সরকারি ভাবে নির্মিত মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। তার পাশে কেনো আরেকটি নতুন মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, লোকজন মহাসড়ক পারাপার হতে চাচ্ছেন না। তাই এখানে কেন্দ্রীয় নাম করণে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ কাজ চালু হলো।

আবু তাহের নামে একজন মুসল্লি বলেন, কেন্দ্রীয় মসজিদটি মহাসড়কের সাথে। সড়ক সম্প্রসারণ করলে মসজিদটি ভাঙ্গা পড়বে। তবে মাত্র ৫০ গজ দুরে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অত্যাধুনিক মানের মডেল মসজিদ নির্মাণ হয়েছে। যেখানে কয়েক হাজার মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করতে পারবেন। অথচ একটি মহল মডেল মসজিদকে অবজ্ঞা করছে। আর আরেকটি মসজিদের নাম ব্যবহার করে সেখানে মার্কেট ব্যবসা শুরু করেছেন। কিন্তু একই স্থানে নতুন করে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ করার কোনো প্রয়োজন নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একটি জামে মসজিদের ঈমাম বলেন, পুঠিয়া সদরের ৫০০ মিটারের মধ্যে ৭টি জামে মসজিদ আছে। কিন্তু মসজিদ নির্মাণে ধর্মীয় কিছু বিধি বিধান রয়েছে। ওয়াক্ত ও জুম্মা মসজিদের মধ্যে অনেক ফারাক আছে। আর যেখানে সেখানে জামে বা জুম্মা মসজিদ নির্মাণ বা চালু করা যাবে না মর্মে উল্লেখ আছে। তিনি বলেন, সদরে আধুনিক মানের একটি মডেল মসজিদ নির্মাণ হয়েছে। এর সাথে আরেকটি মসজিদ নির্মাণের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।

এ বিষয়ে মসজিদ নির্মাণ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম নুর হোসেন নির্ঝর বলেন, মডেল মসজিদের সাথে কেন্দ্রীয় মসজিদের কোনো সম্পর্ক নেই। মহাসড়ক সম্প্রসারণ কাজে বাধা হচ্ছিল পূর্বের কেন্দ্রীয় মসজিদটি। সেটা যেকোনো সময় ভাঙ্গা পড়বে। তাই সাথে আরেকটি মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। পানি নিস্কাশনের ড্রেন বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মসজিদের নিচে ড্রেন রাখার কথা আছে।

তবে রাজশাহী জেলা পরিষদের সদস্য (পুঠিয়া) আসাদুজ্জামান মাসুদ বলেন, যদ্দুর জানি মসজিদ নির্মিত ওই স্থান জেলা পরিষদের অধিনে। তবে সেটি ওই এলাকার বর্ষা মৌসুমে পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেন হিসাবে ব্যবহার হচ্ছিল। কিন্তু সেই ড্রেন বন্ধ করে কিভাবে বানিজিক মার্কেটসহ মসজিদ নির্মাণ হচ্ছে তা জানা নেই। তবে বিষয়টির সার্বিক খোঁজ নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে পুঠিয়া-দুর্গাপুর সাংসদ ডাঃ মনসুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার উপজেলা মডেল মসজিদের সাথে আরেকটি নতুন মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে সেটা শুনেছি। তবে সামনে জাতীয় নির্বাচন আর মসজিদটা একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তাই এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না।