পুঠিয়ায় সরকারি ১৮ বিঘা জমির মালিক এখন প্রভাবশালীরা, উদ্ধারে তৎপরতা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক :

সরকারি ১নং খাস খতিয়ানের জমি কোনো ভাবেই সাধারণ মানুষ মালিক হওয়া সম্ভব নয়। তবুও রাজশাহীর পুঠিয়ায় তা সম্ভব করে দিয়েছেন ভূমি সংশ্লিষ্ট কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। উপজেলার চক পলাশী মোজায় ৮৬২ নং দাগে ৬.১০ একর জমির মালিক সরকার অথচ ওই জায়গায় বর্তমান মালিক উক্ত এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি, যাদের নামে এখন চলছে খাজনা খারিজ। যদিও ভূমি আইনে তা কখনোই সম্ভব না। আর অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন ভূমি সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ধোপাপাড়া এলাকার চক পলাশীতে সরকারি ওই জায়গার মুনছুর রহমান দিং, পিতা আব্দুর শাহ তারা দখল ও নিজ নামে করে নিয়েছেন ৪.৭ একর জমি। পরে আরো ২.৩ একর জমি বেহাত হয়ে চলে গেছে অন্য আরেকটি খতিয়ানে। এক সময় ওই যায়গা সরকার কয়েকজন ব্যক্তিকে খাওয়ার জন্য কবুলত ও পত্তন করেন সরকার। এরপরে সরকারি ওই জায়গা জমি নিজের নামে মালিকানা করে নিতে ভূমি কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজশে সে কাজ করে, পরে সফলও হয় ওই প্রভাবশালীরা। যদিও তৎকালীন কানুনগো ১৬-০৬-১৯৮৮ সালে ভলিউম বইয়ে লিখে রেখেও যান সবকিছুই ভুয়া ও জমি সরকারের।

পরে ২০১৬ সালে সরকারি জায়গা জমি উদ্ধার করার লক্ষে স্হানীয় ওমর ফারুক নামের এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত দায়ের করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ০১-০৮-২০১৭ সালে প্রায় ৭ বছর আগে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করার জন্য পাইকপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে মামলা করার আদেশ দিলেও, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে, সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার মামলা করতেও গড়িমসি করেছেন। কেন এতো বছরেও উদ্যোগ নেয়া হয় নি সরকারি সম্পত্তি তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি কেউই। চলতি বছরের মে মাসে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেন সানিয়া বিনতে আফজাল, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর। সরকারি সম্পত্তি উদ্ধারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সাধারণ মানুষের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মাঝে জন্ম নিচ্ছে নানান রকম প্রশ্ন। আর আংগুল তুলেছেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের উপর।

এছাড়াও দেখা যাচ্ছে ওই সম্পত্তিগুলো বিভিন্নভাবে হাত বদল হতে। ইতোমধ্যে কেউ কেউ ওই জমি বিক্রিও করে দিয়েছেন।

এলাকাবাসীর একাধিক ব্যক্তিরা বলছেন টাকা দিয়ে সরকারি জমি কিনে ভবিষ্যতে তারা বিপদে পড়বেন। কিভাবে সরকারি জমি নিজের নামে দলিল করে নেয় এটাও তাদের জানা নেই। সেই জমিগুলো আবার নিজ নামে দলিল করার পর বিক্রিও করে দিচ্ছেন হরহামেশাতে। জমি সংশ্লিষ্টদের এমন অবজ্ঞার কারণে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে সাধারণ মানুষের।

ওই সম্পত্তি ভোগ দখলকারী কামরুল ইসলাম কামু তিনি বলেন, জমিতে কোন সমস্যা নাই ওইগুলো আমাদের জমি। যদি কোন সমস্যা থাকে, এ বিষয়ে আইন কানুন আছে তারা দেখবে।

জমি উদ্ধারে কেনো মামলা করা হয় নি এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে পুঠিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সে সময় আমি এখানে ছিলাম না। আপনাদের কাছে যে কাগজপত্র দেখছি, সেগুলো রেখে যান, দেখেশুনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এইচ/আর