পাহাড়ে ‘বৈসাবি’ শুরু আজ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ অন্তত ১১টি ভাষাভাষির মানুষের বসবাস পার্বত্য চট্টগ্রামে; যাদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব বর্ণিল কৃষ্টি-সংস্কৃতি রয়েছে। সমৃদ্ধ জীবনধারায়ও আছে বৈচিত্র্য। পাহাড়িদের সবচেয়ে উৎসবমুখর, ঐতিহ্যবাহী এবং প্রাণের বর্ষবরণ উৎসব ‘বৈসাবি’। শুরু হচ্ছে আজ শুক্রবার। ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাইং এবং চাকমাদের বিজুর প্রথম অক্ষরগুলোর মিলিত শব্দ ‘বৈসাবি’।

‘তুরু তুরু তুরু রু বাজি বাজত্তে, পাড়ায় পাড়ায় বেরেবং বেক্কুন মিলিনে, এচ্যে বিজু, বিজু, বিজু’—এমন গানে মুখর এখন পার্বত্য চট্টগ্রাম। শুধু বিজু নয়, সাংগ্রাইং আর বৈসু গানও বাজছে পাহাড়জুড়ে। পুরনো বছরের সব গ্লানি ভুলে, নতুন বছরকে রাঙিয়ে নিতে আজ আনন্দ-উল্লাসের সূচনা। বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উপলক্ষে পাহাড়ের পাড়া-মহল্লায় বেজে উঠেছে মিলনের গান।

আজ চাকমাদের বিজু। চৈত্রসংক্রান্তির শেষ দুই দিন ও বাংলা বর্ষের প্রথম দিন—এই তিন দিন মূলত বিজু পালন করে চাকমা নৃগোষ্ঠীর মানুষ। নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে মূলত পাহাড়ে বৈসাবির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

চৈত্রসংক্রান্তির দিন থেকে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসব শুরু হয়। গরয়া নৃত্য ত্রিপুরাদের বৈসুর প্রধানতম আকর্ষণ। নববর্ষের দিন থেকে মারমাদের সাংগ্রাইং উৎসব শুরু। জলকেলি (পানি) উৎসব সাংগ্রাইংয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক।

বৈসাবিতে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সবাই ফুল দিয়ে ঘর সাজায়। ঘরে ঘরে পূজা-পার্বণ পালনের প্রস্তুতি নেয়। বহু শাকসবজি দিয়ে তৈরি ‘পাজন’ বা ‘পাচন’ আপ্যায়নের প্রধান খাদ্য। বয়স্কদের প্রণাম জানিয়ে স্নান করানো সংস্কৃতির অংশ।

গেল বছরজুড়ে নানা সহিংস ঘটনা এবং সর্বশেষ বাঘাইছড়িতে সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতের ঘটনার কারণে কিছুটা ব্যত্যয় ঘটলেও বৈসাবি উদ্যাপনে প্রস্তুত পাহাড়িরা।

বর্ষবরণের আয়োজনে নানা ভিন্নতা থাকলেও উৎসবে মিলিত হয় সবাই। ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, সামাজিক কৃষ্টি-সংস্কৃতির নানা বৈচিত্র্যে তারাও মেতে ওঠে।