পার্বতীপুরে ঘরে বসেই দেখা যায় চাঁদ-সূর্য

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

শহরের মনিরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পিয়ন রবিউল ইসলাম। সামান্য বেতনের চাকরি তার। তার ওপর দুটি কিডনি অচল রবিউলের। সপ্তাহে দু’বার ডায়ালিসিস করাতে হয়। শুক্রবার এই রবিউলের ওপরই মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিল কালবৈশাখী। এদিনের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে তার ঘরের সব টিন ছিদ্র হয়ে গেছে। ঘরে বসেই দেখা যাচ্ছে চাঁদ-সূর্য। এখন কিডনি ডায়ালিসিস করবেন না ঘর মেরামত করবেন সেই চিন্তায় দিন কাটছে তার।

রুস্তম নগরের সোহানুর রহমান অভাবের সংসারে অনেক কষ্টে নির্মাণ করেছিলেন দুটি টিনের ঘর। ১০ মিনিটের শিলাবৃষ্টি তার ঘর দুটি চুরমার করে দিয়েছে। শুধু রবিউল ও সোহান নয়, উপজেলার হাজার হাজার বাড়ির টিন ছিদ্র হয়ে গেছে শিলার আঘাতে।

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্কুলসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছেন। আবারও বৃষ্টির আশঙ্কায় ঘরের মালপত্র ঢেকে রেখেছেন পলিথিন দিয়ে। আর শহরে টিনের দোকানে ভিড় বেড়েছে। এ সুযোগে দোকানদাররাও ঢেউটিনের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেককে পার্শ্ববর্তী উপজেলা সৈয়দপুর, বিরামপুর ও ফুলবাড়ী থেকে টিন কিনে আনতে দেখা গেছে।

এদিকে কোনো ব্যবসায়ী যাতে বেশি দামে টিন বিক্রি করতে না পারেন, সে জন্য শনিবার দুটি টিন দোকানে অভিযান চালিয়ে চার হাজার টাকা জরিমানা করেছেন পার্বতীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান।

চণ্ডীপুর ইউনিয়নের কালিকাবাড়ী গ্রামের দিনমজুর সাইদুল হক বলেন, তার টিনের দুটি ঘর ফুটো হয়ে গেছে। বাজারে প্রতিবান্ডিল টিন ৫শ’ থেকে এক হাজার টাকা বেশি চাচ্ছে দোকানদাররা। টিন বাঁধার জন্য জিআই তার কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে। একই সঙ্গে মজুরের দাম ৪শ’ থেকে বেড়ে এক হাজার টাকায় উঠেছে।

মন্মথপুর ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া গ্রামের কৃষক আ. জব্বার বলেন, বোরো ধান লাগানোর পর কোনো কৃষকের হাতে টাকা নেই। হঠাৎ করে শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের ঘরের টিন ছিদ্র হওয়ায় সবাই বিপদের মধ্যে আছে। ধার-দেনা করে টিন কিনতে হচ্ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আ. সাত্তার জানান, উপজেলার অনেক স্কুলের টিনের চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে শিলার আঘাতে নিহত চণ্ডীপুর ইউনিয়নের চৈতাপাড়া গ্রামের সৈয়দ আলীর পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।