পাবনায় স্বামীকে হত্যার দায়ে রাজশাহীর আদালতে স্ত্রীসহ তিনজনের ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিবদক:

পরোকীয়ার জের ধরে পাবনায় স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যারে দায়ে রাজশাহীর আদালতে স্ত্রীসহ তিনজনের ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরিন কবিতা আক্তার এ রায় দেন।

কুলসুম নাহারের স্বামী ও পাবনা সদর থানার টেকনিক্যাল মোড়ের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে মোশাররফ হোসেন ওরফে খোকন মৃধাকে (৫০) শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে তাদের এই দণ্ড দেওয়া হয়।

দণ্ডপ্রাপ্তরা আসামীরা হলেন, পাবনা সদর থানার গোপালপুর এলাকার গোলাম মোহাম্মদের মেয়ে কুলসুম নাহার ওরফে বিউটি (৪৬), জেলার আতাইকুলা উপজেলার রাণীনগর গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে রুহুল আমিন (৪৭) এবং একই গ্রামের মৃত ইয়াসিন মোল্লার ছেলে সোলেমান আলী (৪৫)।

রায় ঘোষণার সময় শুধু কুলসুম নাহার বিউটি আদালতে উপস্থিত থাকলেও বাকি দুই আসামি রুহুল আমিন ও  সোলেমান আলী ঘটনার পর গ্রেফতার হলেও পরে জামিন নিয়ে পালিয়ে যায়। রায় ঘোষনার পরে কুলসুম নাহারকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, টাকার ওপরে মোবাইল নম্বর পেয়ে এক ছেলে ও দুই মেয়ের মা কুলসুম নাহারের সঙ্গে কথা শুরু করেন রুহুল আমিন। পরে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। একপর্যায়ে তারা মোশাররফ হোসেনকে তাদের ‘পথের কাটা’ মনে করেন। তাই তারা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১১ সালের ৩০ জুন রাতে কুলসুম নাহারের পরকীয়া প্রেমিক রুহুল আমিন তার বন্ধু সোলেমান আলীকে নিয়ে পবনা শহরের কালাচাঁদপাড়া মহল্লায় মোশাররফের ভাড়া বাসায় যান। এরপর তারা মোশাররফের ঘরে লুকিয়ে থাকেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে মোশাররফ হোসেন ঘরে ফিরলে তারা তিনজন মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর গুম করতে লাশ একটি বস্তার ভেতর ঢোকানো হয়। কিন্তু এরই মধ্যে প্রতিবেশীরা বিষয়টি টের পেয়ে যান। তখন রুহুল আমিন ও সোলেমান আলী পালিয়ে যান।

পরে ওই রাতেই পাবনা সদর থানা পুলিশ গিয়ে মোশারফের বাড়ি থেকে তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে তার স্ত্রী কুলসুম নাহারকে গ্রেফতার করে।

আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু আরও জানান,  এ মামলার বিচারকাজ চলাকালে মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আসামি কুলসুম নাহার একমাসের মধ্যে এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করতে পারবেন।

আসামি কুলসুম নাহার ওরফে বিউটির পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেছেন আইনজীবী মাহমুদুর রহমান রুমন।

স/আ