‘পাগল’ পেলেই সুখ মারুফ-মরিয়ম দম্পতির

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম হাসিনা নগর। এ গ্রামের অতি-সাধারণ এক দম্পতির ‘পাগলের বাড়ি’ অখ্যাত গ্রামটিকে পরিচিত করছে মানবতার তীর্থস্থান হিসেবে।

কারও পা নেই, চোখ নেই। কেউ কেউ পারে না শুনতে বা বলতে। শারীরিক নানা প্রতিবন্ধতার ছাড়াও সমস্যা হলো সবাই মানসিক ভারসাম্যহীন। তাদের প্রতিপালন করছেন মারুফ-মরিয়ম দম্পতি।

বুড়ো-বুড়িসহ নানা বয়সের নারী-পুরুষের কোরাস নাচ-গানের দৃশ্য প্রমাণ করে ‘পাগলের বাড়ি’ নামের স্বার্থকতা। কারও পা নেই, চোখ নেই। কেউ কেউ পারে না শুনতে-বলতেও। শারীরিক নানা প্রতিবন্ধতার ছাড়াও সবার সমস্যা হলো সবাই মানসিক ভারসাম্যহীন।

পরিবার-পরিজনই হয়তো এদের বোঝা ভেবে ফেলে গেছে, নয় তো প্রিয়জনদের কাছ থেকে হারিয়ে নিরুদ্দেশ এ মানুষগুলো। পথ থেকে কুড়িয়ে এনে বাড়িতে রেখে পরম মমতায় প্রতিপালন করছেন মারুফ-মরিয়ম দম্পতি। তাদের সেবা-শুশ্রুষায় জীবন ফিরে পেয়েছেন অসহায় এ মানুষেরা।

এ প্রসঙ্গে এম এ মারুফ কেইন বলেন, আমি ভাসমান মানুষদের সেবা করতাম। পরে চিন্তা করলাম সবাইকে একসাথ করা যায় কিনা। আমরা শুধু তাদেরকেই এখানে নিয়ে আসি যারা রাস্তা ঘাটে পরে থাকে ও আসহায়।

মারুফ কেইনের সহধর্মিণী মরিয়ম বেগম বলেন, আমরা তাদের সেবা করছি। দেখাশুনা ও খাওয়া দাওয়া করাচ্ছি।

২০১৪ সালে এক জন মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে আশ্রয় দিয়ে শুরু হয় মারুফ-মরিয়ম দম্পতির এ সেবা কার্যক্রম। শুরুতে অনেকে বাঁকা দৃষ্টিতে তাকালেও ধীরে ধীরে এলাকাবাসীর সহযোগিতা উৎসাহ যোগায় তাদের। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা বলছেন, মহৎ এই উদ্যোগ প্রসারে আরো সহযোগিতা প্রয়োজন।

রংপুর ভাসমান নিরাশ্রয় মানুষের সেবাকেন্দ্রের সভাপতি নিখিল চন্দ্র রায় বলেন, সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত। সবাইকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।

ঠিকানাবিহীন অসহায় মানুষের কল্যাণে সেবাকেন্দ্রের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সহায়তার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক আসিব আহসান।

তিনি বলেন, সরকারিভাবে তাদের যতটুকু সাহায্য করা সম্ভব আমরা তার ব্যবস্থা করে দেব।

পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর সেবাকেন্দ্র থেকে ১৮ জন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ বাড়ি ফিরে গেলেও গ্লোরি সমাজ উন্নয়ন সংস্থার এই সেবা কেন্দ্রে বসবাস করছেন ১৭ জন অসহায় মানুষ।