সোমবার , ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ২৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

পাকিস্তানের সাথে জল-চুক্তিকে ‘অস্ত্র বানাতে চায়’ ভারত

Paris
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬ ১০:৫২ অপরাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ভারত-শাসিত কাশ্মীরের উরিতে হামলার এক সপ্তাহ পর ভারত আজ সংকেত দিয়েছে, পাকিস্তানের সাথে করা চুক্তি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে না এলেও সিন্ধু অববাহিকার জলকে ‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে’ ব্যবহার করবে তারা।

 

সম্প্রতি ভারত শাসিত কাশ্মীরের উরিতে একটি সেনাঘাঁটিতে কয়েকজন বন্দুকধারী আক্রমণে ১৮ জন সৈন্য নিহত হয়। ভারত বলছে, ওই আক্রমণকারীরা পাকিস্তান থেকে আসা এবং একটি নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনের সদস্য।

 

এ আক্রমণের পর থেকে ভারত কিভাবে এর পাল্টা জবাব দেয়া হবে তা নিয়ে উর্ধতন মহলে নানা ভাবনাচিন্তা চলছে। আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভারতের শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের এক জরুরি বৈঠক হয়।

 

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সিন্ধু, ঝিলম ও চেনাব – এই তিনটি নদীর জলকে কীভাবে ভারত আরও বেশি ব্যবহার করতে পারে সেই রাস্তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হবে।

 

বর্তমান চুক্তি অনুসারে পাকিস্তান এই তিনটি নদীর জলের সিংহভাগ পেয়ে থাকে। কিন্তু ভারত বলছে, পারস্পরিক আস্থা না-থাকলে সেই চুক্তি বজায় রাখা সম্ভব নয়।

 

১৯৬০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান সিন্ধু অববাহিকার ছটি নদীর জল ভাগাভাগি নিয়ে যে চুক্তিতে সই করেছিল, গত ছাপ্পান্ন বছরে দুদেশের মধ্যে অনেক যুদ্ধবিগ্রহ সত্ত্বেও তাতে কোনও ছেদ পড়েনি।

 

কিন্তু উরিতে জঙ্গী হামলার পর থেকেই ভারতে এই ভাবনা শুরু হয়েছে এই চুক্তিকে কীভাবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা সম্ভব। যদিও ভারত সরাসরি এই চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেনি ।

 

বরং প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আজ পররাষ্ট্র সচিব, জলসম্পদ সচিব, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা-সহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকে এটাই ঠিক হয়েছে – চুক্তি থেকে বেরিয়ে না-এসেও ভারত এখন থেকে পাকিস্তানের ভাগের নদীগুলোর জল বেশি করে ব্যবহার করবে।

 

এই ধরনের কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের ওপর চাপ ছিল বিজেপির পক্ষ থেকেও।

 

প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা যেমন মনে করেন, “চুক্তি অনুযায়ী আশি শতাংশ জলই পাকিস্তান পায় – আর তার ফল ভুগতে হয় জম্মু-কাশ্মীরকে। ফলে দুনিয়ার কে কী বলল, সে সব নিয়ে না-ভেবে এখনই এই চুক্তি পর্যালোচনা করা দরকার।”

 

সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব ও বিজেপি এমপি আর পি সিং-ও বলেছিলেন, “দুটো সার্বভৌম দেশের মধ্যে চুক্তি ততক্ষণই বহাল থাকে যতক্ষণ তারা একে অন্যের সার্বভৌমত্বকে মর্যাদা দেয়।”

 

পাকিস্তান ভারতের সার্বভৌমত্বকে স্বীকার করছে না – সরকারও একই কথা মানে, তবে শেষ পর্যন্ত তারা চুক্তি বাতিল করার কথা ঘোষণা করতে পারল না মূলত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার কথা ভেবেই।

 

কিন্তু সিন্ধু-ঝিলম-চেনাবের জল বেশি করে ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে ভারত জম্মু-কাশ্মীরে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছে বলেই মনে করেন সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক বিবেক কাটজু।

 

মি কাটজু বলছিলেন, “এই চুক্তি কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীরেই খুব অপ্রিয় – কারণ তারা মনে করে এই চুক্তির ফলে তারা তাদের ন্যায্য পানির হিস্যা পায়নি। এখন এই বাড়তি জল সেখানে ব্যবহার করে ভারত যেমন সেই ক্ষোভ সামাল দিতে চাইছে, তেমনি পাকিস্তানকেও চাপে রাখতে চাইছে। কারণ এটা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই, এই চুক্তি তার উদ্দেশ্য সিদ্ধ করতে পারেনি, কারণ পাকিস্তানের জন্য এটি বেশিই দরাজ।”

 

কিন্তু সত্যিই যদি সিন্ধু-ঝিলম-চেনাব থেকে ভারত বেশি জল ব্যবহার করে – যদিও সেই জল আবার নদীতে ফেরানো হবে কি না ভারত তা স্পষ্ট করেনি – তাতে পাকিস্তানের আশঙ্কার যে যথেষ্ট কারণ আছে বিশেষজ্ঞরা সবাই তা নিয়ে একমত।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক