মঙ্গলবার , ২৩ আগস্ট ২০১৬ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেই অধিকাংশ নৌ-যানে

Paris
আগস্ট ২৩, ২০১৬ ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

নৌ-পথে লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রতি বছর মারা যান শত শত মানুষ। কিন্তু এতো দুর্ঘটনার পরও অধিকাংশ নৌ-যানে নিরাপত্তা বলয় খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

 

নদীপথে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবেলায় নৌ-যানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার কথা। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নির্দেশনাকেও নৌ-যান মালিকরা মানছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

নৌ-পথে নিরাপত্তার জন্য সাধারণত একটি লঞ্চে বয়া, লাইফ জ্যাকেট, বোট, জিপিএস, ভিএইচএফ, ইকো সাউন্ড, কম্পাস ও ফায়ার ব্যবস্থা থাকার কথা। কিন্তু রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, দুই একটি অত্যাধুনিক লঞ্চ ছাড়া অধিকাংশেই নেই এসব নিরাপত্তা সহায়ক সরঞ্জাম।

 

পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৪৭ সাল থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে ২ হাজার ৫৪৫টি। এর মধ্যে নিমজ্জিত হয় ১ হাজার ৫২৭টি নৌ-যান, উদ্ধার হয় ৯৯৯টি এবং ৫২৯টিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। প্রাণহানি হয়েছে ১৮ হাজার ২৬২ জনের। আহত ও নিখোঁজ প্রায় ২২ হাজার। সম্পদহানি হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার।

 

নদীপথে জেগে ওঠা ডুবোচরের হাত থেকে রক্ষা পেতে লঞ্চগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তির ইকোসাউন্ডার, জিপিএস ও ভিএইচএফ ওয়ার্লেস যন্ত্র ব্যবহার এবং দক্ষ জনবল দিয়ে পরিচালিত করতে বলে আসছে কর্তৃপক্ষ। তবে এসব নির্দেশনার প্রতি কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই লঞ্চ মালিকদের।

 

সংশ্লিষ্টরা জানান, ইকো সাউন্ডার মেশিনের মাধ্যমে নদীর তলদেশে থাকা ডুবোচর দেখে লঞ্চ পরিচালনা করা হয়। সামনে কোনো নৌ-যান থাকলে জিপিএসের মনিটরে গ্রাফচিত্রে ভেসে ওঠে এবং ওই চিত্র দেখে সহজেই লঞ্চ পরিচালনা করা সম্ভব। ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটারের ফ্রিকোয়েন্সি ক্ষমতা সম্পন্ন ভিএইচএফ ওয়ার্লেসের মাধ্যমে জানা যায়, কোথায় কতো দূরত্বে কোন নৌ-যান অবস্থান করছে। এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, গুটিকয়েক লঞ্চে জিপিএস থাকলেও নেই ইকো সাউন্ডার মেশিন। ঢাকা-বরিশাল-বরগুনা রুটের যুবরাজ-৪ লঞ্চে মাস্টারের কক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে আছে শুধু একটি কম্পাস। লঞ্চটির যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৩১০ জন। একটি বয়া ৪ জন মানুষকে ভাসিয়ে রাখতে পারে। সে হিসেবে কমপক্ষে ৭৮টি বয়া থাকার কথা থাকলেও লঞ্চটিতে আছে মাত্র ৪৩টি।

 

নৌ-যানটির মাস্টার আলম বলেন, ‘এখানে আমাদের কিছুই বলার নেই। মালিক যদি নিরাপত্তা সহায়ক বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল না রাখেন, সেক্ষেত্রে আমরা কি করবো? আর নিরাপত্তা বিষয়ে কোনো কিছু জানার থাকলে মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কেননা, আমরা মালিক নই। তাই এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলারও ক্ষমতা নেই’।

 

যুবরাজ-৪ এর মালিক মো. আওলাদ হোসেনের কাছে নৌ-যানে নিরাপত্তা সহায়ক যন্ত্র না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন খুব ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবো’। বলে ফোনটি কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 

প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক নৌ-বিশেষজ্ঞ খবিরুল হক চৌধুরী বলেন, নৌ-পথে যেকোনো মুহূর্তে দুঘর্টনা ঘটতে পারে। তাই অবশ্যই নৌ-যানে নিরাপত্তা সহায়ক উপকরণ রাখতে হবে। এজন্য বিআইডব্লিউটিকে নিয়মিত নৌ-যানে তদারকি করতে হবে। বিআইডব্লিউটিএ যদি সবকিছু সঠিকভাবে তদারকি না করে সেক্ষেত্রে নৌ-যান মালিকরা গাফিলতি করবেন- এটাই স্বাভাবিক।

 

বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর মো. মোজাম্মেল হক বলেন, প্রত্যেকটি নৌ-যানে নিরাপত্তা বিষয়ক সরঞ্জাম থাকা বাধ্যতামূলক। কোনো নৌ-যানে না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নৌ-যানে নিরাপত্তা বিষয়ক সরঞ্জামের ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত মেনে নেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

সূত্র: বাংলা নিউজ

সর্বশেষ - জাতীয়