পবায় প্রতিবাদী যুবককে পিটিয়ে পুলিশে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর পবার দর্শনপড়ায় এলাকাবাসী ত্রাণ না পাওয়ায় প্রতিবাদকারী এক এক যুবক ফেসবুকে ভিডিও  ও স্ট্যাটাস দেওয়ায়  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মিলে তাকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবকরে নাম বোরহানুল ইসলাম মিলন (২২)। তাঁর বাড়ি পবার দর্শনপাড়া তিন নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে থানায় গেলে পুলিশ মিলনের ভাই বাবু মুন্নাকেও আটক করেছে। এলাকাবাসীর মাঝে এ নিয়ে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রতিবাদে থানা ঘেরাওয়েরও চেষ্টা করে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, পবার দর্শনপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল রাজ তাঁর পছন্দের লোকজনদের একাধিকবার খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন। কিন্তু প্রকৃত অসহায় ও দরিদ্র মানুষগুলোকে তিনি সরকারি ত্রাণ দেননি। বাদপড়া এরকম কয়েকজন প্রতিবেশীকে নিয়ে এবং ত্রাণ না পাওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে যুবক মিলন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এর জের ধরে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে চেয়ারম্যান কামরুল হাসান তাঁর লোকজনকে দিয়ে মিলনকে ইউনিয়ন পরিষেদে ডেকে নিয়ে যান। এরপর চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্য হাসান মিলে মিলনকে বেদম মারধর করেন। এতে করে মিলনের হাতের আঙ্গুল ভেঙ্গে যায় এবং শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখমপ্রাপ্ত হোন।

এরপর চেয়ারম্যান নিজে মিলনকে ধরে রাজশাহী মেট্রোপলিট পুলিশের কর্ণহার থানায় নিয়ে যান। তারপর তার নামে মিথ্যা প্রচারণা ছড়ানোর অভিযোগে মামলাও দায়ের করেন। এদিকে মিলনকে নির্যাতনের ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রতিবাদে বেলা ১২টার দিকে ওই এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ থানা ঘেরাও করার চেষ্টা করেন। এবং মিলনকে মারধর ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানান। এসময় তারা চেয়ারম্যানের শাস্তিও দাবি করেন। তবে পুলিশ পরে মিলনের ভাই বাবু মুন্নাকেও আটক করে পুলিশ।

৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আনোয়ারা, মেলজান, অজিফা, চম্পা ও সনিয়া বেগমসহ আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার সরকারি ও বেসরাকারী ত্রাণ পাইনি। খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে দিনাদিপাত করছি। আমাদের এই কষ্ট দেখে মিলন সত্য কথা ফেসবুকে তুলে ধরেন। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বর মিলে মিলনকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছেন। সেইসাথে থানায় আটকে রেখেছেন।

জানতে চাইলে চেয়ারম্যান কামরুল হাসান রাজ বলেন, ইউনিয়নের যতগুলো ত্রাণ সামগ্রী এসেছিলো সুষ্ঠুভাবে বন্টন করা হয়েছে। আ্েরা অনেকে পাবেন। কিন্তু এ নিয়ে মিথ্যা ফেসবুকে প্রচার করা হয়েছে। তবে মিলনকে মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়।
তিনি আরো বলেন, মিলন মিথ্যাগুজব ছড়িয়ে সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট কর্রা চেষ্টা করছে। এ কারণে মিলনকে ধরে থানায় সোদর্প করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়েছে।’

কর্ণহার থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলী তুহিন বলেন, ত্রাণ নিয়ে মিথ্যা প্রচার করার অপরাধে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বোরহানুল ইসলাম মিলনকে এবং এই ধরনের ভিডিও ধারন করে অপপ্রচার চালানোর মদদে মিলনের ভাই বাবু মুন্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে মিলনের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ থানায় এসে কোনো অভিযোগ করেননি। তাকে নির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স/আর