বুধবার , ৩ জুলাই ২০১৯ | ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরীর খবর
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

পবায় টোলের নামে চাঁদাবাজি, প্রতিবাদে মরিচ কিনলেন না ব্যবসায়ীরা

Paris
জুলাই ৩, ২০১৯ ১১:০৭ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর পবায় টোলের নামে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সবজি-মরিচ কিনেননি ব্যবসায়ীরা। এতে বিপাকে পড়েন মরিচচাষিরা। মরিচ বিক্রি করতে না পেরে তারা বাড়িতে আবার ঘুরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে বুধবার দুপুরে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাঝে। তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের চাঁদাবাজি বন্ধেরও দাবি জানিয়েছেন।
খড়খড়ি বাইপাশ এলাকার পাইকারী ব্যবসায়ীরা জানান, খড়খড়ি বাইপাশের পাশে তাদের বেশ কয়েকটি আড়ৎ রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ছোট আকারের একটি হাট বসিয়ে মরিচ ও অন্যান্য কাঁচা সবজি কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠান। বুধবার সকাল থেকেও কোনো বাধা ছাড়ায় ওই হাটে সবজি কেনেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা। কিন্তু বিকেলে মরিচ কিনতে গেলে স্থানীয় পারিলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আসাদুল হকের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল মণ প্রতি ক্রেতা ও বিক্রেতার নিকট থেকে ৪০ টাকা করে ৮০ টাকা হারে চাঁদা দাবি করেন। আসাদুল দাবি করেন, তাঁর ভগ্নিপতি আরিফুল ইসলাম খড়খড়ি হাটটি বাৎসরিক ১০ হাজার টাকায় লিজ নিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে। সেই সূত্র ধরে তারা এখন থেকে খড়খড়ি বাইপাশ এলাকায় বসা হাটটিতে টোল আদায় করবেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানান সবজিচাষি ও ব্যবসায়ীরা। সকালে সবজি বেচা-কেনা হলেও বিকেলে প্রতিবাদে মরিচ কিনেননি ব্যবসায়ীরা। ফলে বিপাকে পড়েন মরিচচাষিরা।

স্থানীয় ব্যবসায়ী রেজাউল করিম দাবি করেন, খড়খড়ি স্কুলের সামনে হাটটি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ওই হাটটি নামেমাত্র লিজ নিয়ে এখন খড়খড়ি বাইপাশে এসে চাঁদাবাজি করতে শুরু করেছেন আরিফুল ইসলাম, আসাদুল হক এবং তাঁদের লোকজন। তারা ক্রেতার নিকট থেকে মণপ্রতি ৪০ টাকা এবং বিক্রেতার নিকট থেকে মণপ্রতি ৪০ টাকা হারে চাঁদা দাবি করেন। প্রতি মণে ৮০ টাকা চাঁদা দিতে হলে ব্যবসায়ী ও সবজিচাষিরা লাভ করবেন কত টাকা। এমনিতেই সবজির বাজার খুব খারাপ। এর ওপর মণ প্রতি ৮০ টাকা দিতে হলে লোকসান গুনতে হবে আরো বেশি। তাই তারা টোলের নামে চাঁদা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
সবজি বিক্রেতা দারুশা এলাকার আয়নাল হক জানান, তিনি ১৫ কেজি বেগুন নিয়ে খড়খড়ি বাইপাশে এসেছিলেন। বিক্রি ১৫০ টাকায় বেগুনগুলো বিক্রি করেন তিনি। কিন্তু বিক্রি করার পরপরই হাটের ইজারাদার পরিচয় দিয়ে তার নিকট থেকে ৩০ টাকা খাজনা বা টোল আদায় করা হয়।
আয়নাল বলেন, ‘১৫ কেজি বেগুন বেগুন বিক্রি করে যদি ৩০ টাকা খাজনা দিতে হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাবো? এমনিতেই বেগুনের দাম না পেয়ে কপালে হাত পড়েছে। আবার খাজনার নামে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এসব বন্ধ হওয়া দরকার।’
আরেক মরিচচাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, মরিচের এমনিতেই দাম নাই। ২০ টাকা কেজি। এর ওপর মণ প্রতি ক্রেতা-বিক্রেতাকে ৮০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। তাই বিক্রেতারা ক্ষোভে কোনো মরিচই কেনেননি। বাধ্য হয়ে মরিচ বাড়িতে নিয়ে চলে যাচ্ছি।’
তবে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথা অস্বীকার করেছেন ওই হাটের ইজারাদার আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত চাঁদার বাইরে কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।’

পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ নেওয়াজ বলেন, এর আগেও স্থানীয়রা হাটটি থেকে মসজিদের নামে টাকা উত্তোলন করে আসছিলো। এবারই প্রথম ১০ হাজার টাকায় লিজ দেওয়া হয়েছে। তবে সামনেবার হয়তো এই টাকার পরিমাণ বাড়বে। কিন্তু অতিরিক্ত হারে কেউ চাঁদা তুললে আমরা ইজারা প্রয়োজনে বাতিল করবো।’

স/শা

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর