পদায়নের দাবিতে রাবিতে এডহক নিয়োগপ্রাপ্তদের মানববন্ধন, ৭২ঘণ্টার আল্টিমেটাম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

যোগদানের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে দ্রুত পদায়নের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সদ্য এডহক নিয়োগপ্রাপ্ত ১৩৮ জন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী। সোমবার (২৮ জুন) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচি থেকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের পদায়ন করা না হলে রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যের পদত্যাগসহ আমরণ অনশনের ডাক দিয়েছে নিয়োগপ্রাপ্তরা।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আতিকুর রহমান সুমন এর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য রাখেন- রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারদিন, রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ, শিবিরের হামলায় পা হারানো ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ডিলস, বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মো. রাসেল, মহানগর যুবলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক আরকান উদ্দিন বাপ্পি, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাবি শাখার সাবেক আহ্বায়ক মতিউর রহমান মুর্তজা প্রমুখ। মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও ১/১১ এর সময় গ্রেফতারকৃত ছাত্রলীগ নেতা আজিম বিন কামাল উজ্জ্বল, রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সহ-সম্পাদক মামুন-অর-রশিদ মাহবুব, রাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তৌহিদ মোর্শদ , মহানগর যুবলীগের সদস্য মো. নাসির উদ্দিন, রাবি শাখা বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম রেজা, রাবি শাখা ছাত্রলীগের সদস্য বোরহান উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান তারিফুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান এস.এম. জলি প্রমুখ।

মানববন্ধনোত্তর সমাবেশে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, বর্তমান রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা অনৈতিকভাবে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ১৩৮ জন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদায়ন স্থগিত করে রেখেছেন। নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগ আওয়ামী লীগ, এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানদের প্রদান করা এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে রেখেছেন। আমরা অনতিবিলম্বে নিয়োগের স্থগিতাদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করে পদায়নের দ্রুত দাবি জানাচ্ছি।

নিয়োগপ্রাপ্তরা আরো বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব এর মৌখিক আদেশ এই বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। কিন্তু রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা মন্ত্রণালয়ের মৌখিক আদেশে নাকি আমাদের পদায়ন স্থগিত করে রেখেছেন। কিন্তু বিষয়টি তা নয়, শিক্ষকদের দুই গ্রুপের দলাদলির কারণে আমাদের এই নিয়োগ স্থগিত করে রাখা হয়েছে। শিক্ষকদের দলাদলিতে বলির পাঠা হতে চাই না। বৈধভাবে ১৯৭৩ এর অধ্যাদেশের আলোকে উপাচার্যের ওপর অর্পিত ক্ষমতা বলে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম. আবদুস সোবহান আমাদেরকে নিয়োগ দিয়েছেন। অনতিবিলম্বে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে পদায়ন করা না হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেবো না।

তারা বলেন, শিবিরের বর্বর হামলায় মতিহারের সবুজ ক্যাম্পাস বারবার ছাত্রলীগের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে। আমাদের রক্তের উপর পা দিয়ে আপনারা চেয়ারে বসে আছেন। আমাদের রক্তের ওপর বসে থেকে আপনি আমাদের পদায়ন স্থগিত করেছেন। আপনাকে ৭২ ঘন্টা সময় দিলাম। ৭২ ঘন্টার মধ্যে আমাদের পদায়নের ব্যবস্থা করা না হলে আপনার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আপনি বলছেন শিক্ষামন্ত্রণালয় আমাদের পদায়নের ব্যাপারে নাকি আপনার হাত-পা বেঁধে রেখেছেন। কিন্তু তা নয়, বরং আপনি আমাদের পদায়ন না করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের হাত-পা বেঁধে রেখেছেন। এই মিথ্যাচার ছেড়ে দিন, দ্রুত আমাদের প্রদানের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের দাবি আদায়ে আপনাকে বাধ্য করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ ও ৬ মে সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম. আব্দুস সোবহান ১৩৮ জন শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীকে নিয়োগ ও যোগদানের ব্যবস্থা করেন। ওইদিনই শিক্ষামন্ত্রণালয় উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহাকে‌। বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ এর ১২ (৫) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে একজন উপাচার্যের প্রদান করা নিয়োগের ওপর গত ৮ মে রুটিন দায়িত্ব পাওয়ার পর অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা স্থগিতাদেশ দেন।

স/জে