পত্নীতলায় সংখ্যালঘুর সম্পত্তি দখলের অভিযোগ


পত্নীতলা  প্রতিনিধি: নওগাঁর পত্নীতলায় মতিবুল ইসলাম বুলু নামে এক মুহুরীর বিরুদ্ধে উপজেলা সদর চকনিরখিন মোড়ে বিমান চন্দ্র মন্ডল নামে এক সংখ্যালঘুর ১০ শতাংশ জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। দখল হওয়া জমির বাজার মুল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। স্থানীয় ভাবে পরিত্রাণ না মেয়ে ভুক্তভোগি বিমান চন্দ্র মন্ডল নওগাঁ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এছাড়াও তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ মহাপরিদর্শক, র‌্যাব মহাপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজশাহী ডিআইজি, নওগাঁ জেলা প্রশাসক, জেলা গোয়েন্দা সংস্থা, পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পত্নীতলা থানা অফিসার ইনচার্জ, হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পত্নীতলা উপজেলা কমিটির নিকট অনুলিপি প্রদান করেছেন। জোর পূর্বক সংখ্যালঘুর মূল্যবান সম্পত্তি দখল করায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এলাকার সচেতন মানুষ।

পুলিশ সুপারের নিকট প্রদত্ত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, অভিযোগকারীর পিতামহ শ্রী ব্রজ্যমোহন মন্ডল ২১-০৩-১৯৬৮ সালে চকনিরখিন মৌজার ৩৩৩ নং দাগে ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন চকনিরখিন গ্রামের রজনীকান্ত সাহার ছেলে শ্রী ক্ষিতিশ চন্দ্রের নিকট হতে। এরপর থেকে শ্রী ব্রজ্যমোহন তাঁর নামে কৃত জমি ভোগদখল শুরু করেন।

অভিযোগকারী প্রদত্ত অভিযোগে আরো জানান, পিতামহ ব্রজ্যমোহন মন্ডল ও পিতা শশাংক শেখর সাহা মারা গেলে একটি মহল উক্ত ১০শতাংশ  সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা শুরু করে। বিভিন্ন সময় তাঁরা সম্পত্তি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত ২.৩০ মিনিটে চকজয়রাম গ্রামের ময়েজ উদ্দিনের ছেলে মতিবুল ইসলাম বুলুর নেতৃত্বে চকনিরখিন গ্রামের মৃত শ্রীপদ এর পুত্র সুকেশ, সুকমল ও সুমন, একই গ্রামের সুরেশ এর পুত্র বিরেশ, মৃত রাম পদের পুত্র অজিত, সুজিত ও শুশান্তসহ আরো ২০-২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সম্পত্তিতে ঘর তুলে জোর করে দখল দারিত্ব প্রতিষ্ঠা করে।

রাতেই বিশস্ত ব্যক্তি মারফত তিনি খবর পেয়ে কয়েকজন প্রতিবেশী সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলে মতিবুল ইসলাম বুলু তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং সেখান থেকে চলে না গেলে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করেন। ফলে প্রাণভয়ে তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে তিনি মতিবুল ইসলাম বুলুর সাথে যোগাযোগ করলে সে জানায় তাকে ১০লাখ টাকা প্রদান করলে তিনি পুনরায় তাকে সম্পত্তি ফেরত দিবেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগি বিমান চন্দ্র মন্ডল জানান, জমি দখলের খবর পেয়ে তিনি রাতেই কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে সেখান থেকে চলে আসেন। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেন। এ বিষয়ে ধামইরহাট-পত্নীতলা আসনের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের নিকটও তিনি গেছেন জানিয়ে বলেন, এরপরও তিনি কোন প্রতিকার পাননি। উপায় না দেখে তিনি পুলিশ সুপারের নিকট আবেদন করেছেন প্রতিকারের আশায়।

মতিবুল ইসলাম বুলু, এলাকার একজন প্রখ্যাত ভূমিদস্যু, তাঁর নিজের বসবাসের বাড়িটিও অবৈধ ভাবে দখল করে করা, বাড়ির পাশের আয়েজ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির জমি জোর করে দখল করেছেন, জাল কাগজ তৈরী করে তিনি বুড়িদহ নামে একটি সরকারি বিল দখলে নিতে রসকানাই গ্রামের সাখাওয়াত ও আমজাদ নামে দুই ভাইকে সহায়তা করেছেন। বিভিন্ন স্থানে ভুয়া ম্যাজিষ্ট্রেট, র‌্যাব ও সরকারি কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মুহুরী মতিবুল ইসলাম বুলুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো সত্য নয়। আমি কখনো কারো জমি দখল, চাঁদাবাজি ও সরকারি জলাশয় দখলের সাথে জড়িত ছিলাম না। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া জানান, জমি সংক্রান্ত বিয়য়ে আমার করার কিছু নেই। তবে অন্যান্য অভিযোগ গুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

স/আ.মি