নির্বাচনের আগে নেতৃত্বে বড় পরিবর্তনের ঝুঁকিতে যাবে না আ.লীগ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রাত পোহালেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্মেলন। সম্মেলনে শীর্ষ নেতৃত্ব, বিশেষ করে সভাপতি পদে কোনও পরিবর্তন আসছে না, এটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদটিতেও পরিবর্তনের জোরালো আভাস নেই। এ পদে একাধিক নেতার নাম আলোচনায় থাকলেও এসব আলোচনার অগ্রভাবে রয়েছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদকই। দলটির একাধিক নেতা এ পদে বর্তমান নেতৃত্ব বহাল থাকার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছেন। সম্মেলনে দলের মধ্যম সারির নেতৃত্বেও যে খুব বেশি পরিবর্তন হবে, এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। হাতে গোনা কিছু পদে পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কয়েকজনের ক্ষেত্রে পদবি পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্বের সম্ভাবনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘দলটি অনেক বছর ক্ষমতায়। আবার এটাও বাস্তবতা, সামনে নির্বাচন। এই বিবেচনায় আমার মনে হয় না এক্সপেরিমেন্টের দিকে ক্ষমতাসীন দল যাবে। কারণ নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে নির্বাচনের আগে নতুন করে দল গোছানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।’

অবশ্য এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, ‘দলটি বিতর্কিতদের ছেঁটে ফেলতে চাইলে এটাই সময়। এখনও নির্বাচনের এক বছর বাকি রয়েছে। কিছুটা কঠিন হলেও যোগ্য নেতৃত্ব এনে দলের মেরামত করাটা অসম্ভব হবে না। এটা হয়তো আরও কিছুদিন পরে হলে সম্ভব হতো না। কাজেই যদি কিছু করতে হয়, সেটার উপযুক্ত সময় এখনই। কারণ নতুন বছরে প্রবেশ করলে ভোটের হাওয়া শুরু হয়ে যাবে। জাতীয় পর্যায়ে অনেক তর্কবিতর্ক, আন্দোলন-পাল্টা আন্দেলন হবে। তবে মনে হয় না বড় ফিগারের ক্ষেত্রে আমরা এটা দেখতে পাবো। যাদের কথাবার্তা ও মন্তব্যের কারণে দল বিতর্কিত হয়, বিব্রত হয়, এ ধরনের, দুর্নীতিবাজ বা বাহুবলী মনোভাবের কেউ থাকলে তাদের ছেঁটে ফেলতে পারে। সেটা নিশ্চয়ই দলটির জন্য ভালো হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি সংকট, জলবায়ু পবির্তন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিবেচনা করে করে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের মধ্যে আরও গতিশীলতা দরকার। আমি মনে করি এই বিষয়টি বিবেচনা করে দলটিতে একটি যোগ্য নেতৃত্ব আসবে।’

আওয়ামী লীগের মধ্যে নানা ধরনের বিভক্তি থাকার দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত সময়ে আওয়ামী লীগে নানা ধরনের বিভক্ত দেখেছি। বৃহৎ গণতান্ত্রিক দলে কিছুটা মতপার্থক্য থাকবে, এটা অস্বাভাবিক নয়। গতিশীলতার বৈশিষ্ট হচ্ছে ভিন্ন মত ও পথ থাকবে। তবে এটাকে সামগ্রিকভাবে ঐক্যবদ্ধ করে এগিয়ে যাওয়ার যে নেতৃত্ব প্রয়োজন, সেটা দলটির প্রধান শেখ হাসিনার রয়েছে। তিনি চার দশক ধরে এভাবে দলকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। আমি বিশ্বাস করি, এবারের সম্মেলনে সেই দিনটি বিবেচনায় রেখে আধুনিক ও গতিশীল মানসিকতার ন্যায়নিষ্ঠ নেতৃত্ব আসবে।’

নিয়ম রক্ষার সম্মেলন হবে বলে মনে করছেন লেখক, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ। তার মতে, শীর্ষ পদ তো নয়ই, অন্য পদেও খুব একটা নতুন মুখ দেখার সম্ভাবনা কম।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটি পরিবর্তন হচ্ছে না, এটা তো নিশ্চিত। আর দলটিতে সভাপতিই একক ক্ষমতার অধিকারী। কাজেই দলের অন্য পদে কী পরিবর্তন হলো বা কারা এলেন, এটা খুব বেশি ম্যাটার করে না। আর সেই অর্থে পরিবর্তন দেখা যাবে বলেও মনে হয় না।’ সূত্র: বাংলাট্রিবিউন