নিয়ামতপুরে দলে দলে আসছে ‘জিনাপার্টি’

নিয়ামতপুর  প্রতিনিধি:

তাঁরা একদলে ১৩ জন। বসে আছেন ট্রলি গাড়িতে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে তাঁদের দেখা গেল নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার তিনমাথা এলাকায় ।  যাচ্ছেন ধান কাটার জন্য উপজেলার আশনদী গ্রামে। তাঁদের সঙ্গে রয়েছে কাস্তে, মাথাল, লেপ-কাঁথা, চাল-ডালসহ সাংসারিক জিনিসপত্র। স্থানীয়ভাবে তাঁরা ‘জিনাপার্টি’ নামে পরিচিত।

দলনেতা সহিবুর রহমান জানান, তাঁদের সবার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সাহা পাড়া গ্রামে  । প্রতিবছর আমন ধান কাটার জন্য নিয়ামতপুরে আসেন । এবারও  তাদের মোবাইল করে আসতে বলেছেন, তাই দল বেঁধে এসেছেন । তাঁদের দলে রয়েছেন মোট ১৩  জন। ২৫ থেকে ৩০ দিন থেকে ধান কাটবেন তাঁরা। ধান কেটে পারিশ্রমিক হিসেবে প্রত্যেকে ১০ থেকে ১৫ মণ ধান পাবেন। তবে খাওয়াদাওয়ার দায়িত্ব তাঁদের নিজেদের। এ জন্যই তাঁরা রান্নার সব রকমের সরঞ্জাম নিয়ে যাচ্ছেন।

মো: মামুন নামের ওই দলের এক শ্রমিক বলেন, এই সময়ে হারগে দ্যাশে কোন কাজ কাম থাকেনা। বাড়িতে বস্যাই থাকতে হয়। থাকি এখানে ধান কাটতে আসলে অনেক ধান পাওয়া যায়। তাই ধান কাটতে চল্যা এসেছি। গত বছরে অনেক ধান পেয়েছিলাম।

উপজেলার ভাবিচা গ্রামে ধান কাটতে আসা এমন এক দলের দলনেতা মো: সুবেল জানান, আমার দলে ১৬ জন শ্রমিক আছে। আমরা বছরে দুইবার নিয়ামতপুরে ধান কাটতে আসি।  নিয়ামতপুরে অনেক ধান হয়। এই ধান কাটতে অনেক শ্রমিক লাগে।  তাই এলাকার কৃষকেরা প্রতিবার ধান কাটার মৌসুমে আমাদের ডেকে নিয়ে আসেন।

তিনি আরও জানান, এই ধান কেটে আমরা ‘জিনা’ হিসেবে হিসেবে ১০-১৫  মণ ধান পাই। এতে করে আমরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হই।

ভাবিচা ইউপি সদস্য তুশিত কুমার সরকার জানালেন, ধানের জেলা হিসেবে নওগাঁর খ্যাতি সারাদেশে।  নিয়ামতপুর একটি কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় এখানে প্রচুর ধান  উৎপাদন হয়।

এই ধান কাটার জন্য প্রতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ধান কাটা শ্রমিক নিয়ামতপুরে আসে। এতে করে  আমাদের অনেক সুবিধা হয়। যথা সময় আমরা ধান গোলায় তুলতে পারি।