নিয়মবর্হিভূত বাড়ি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় প্রতিবেশীর বাড়িতে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজশাহী নগরীতে নিয়মবর্হিভূত বাড়ি নির্মাণ করায় প্রতিবেশির বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা।

রোববার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। দম্পতি মিজানুর রহমান ও শিল্পী বেগম অভিযোগ করে বলেন, থানায় মামলা বা অভিযোগ কোনো কিছুই গ্রহণ না করে উল্টো থানা থেকে বের করা দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, রাজশাহী নগরীর মধ্যে নওদাপাড়া এলাকায় পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকুরিরত শহিদুল ইসলাম। তাকে তার নির্মানাধীন বাড়িটি নির্ধারিত যায়গা ছেড়ে করতে বলা হয়। তিনি আমাদের কথার কোনো কর্ণপাত করেননি। বাধ্য হয়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেই। আরডিএ সত্যতা পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। এতে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। চ্যালেঞ্জ করে শহিদুল বলেন, এক ইঞ্চিও যায়গা ছাড়বো না, যত টাকা লাগে খরচ করবো’।

তিনি আরও বলেন, আরডিএ থেকে শহিদুল বারবার অভিযোগ উঠানোর জন্য হুমকি দেয়। অভিযোগ না উঠানো স্থানীয় সন্ত্রাসী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা মনিকে ভাড়া করেন শহিদুল। মনির হুমকির জন্য আমি প্রায় মাসখানেক থেকে বাড়িতে থাকতে পারছি না। এ সুযোগে তারা গত ১৫ তারিখ শুক্রবার রাতে মনি এসে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। আর বলে ‘অভিযোগ না উঠালে তোর বাড়িঘর পুড়িয়ে বেঁচে থাকার ইচ্ছা শেষ করে দেবো। সেদিন শুধু বাড়িতে আবার স্ত্রী ও তিন বছরের সন্তান ছিল।

সেদিন রাতেই বাইরে থেকে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমার বাড়িতে আগুন দেয় মনি তার সাঙ্গপাঙ্গরা। আগুনের লেলিহান শিখায় আমার স্ত্রী ও সন্তান অজ্ঞান হয়ে পরে । তাদের উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আমার বাড়ির আগুন নেভায়। এতে বাড়ির সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এসব ঘটনার পর থানায় মামলা করতে গেলে মামলা তো দূরের কথা কোনো অভিযোগ নেয়নি। তারা উল্টো থানা থেকে বের করে দেয় আমাকে। সঠিক বিচার না পেয়ে আমি এখন আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে ঘুরছি। বিচারের দাবিতে পরিবার নিয়ে ঘুরলেও কোনো বিচার পাচ্ছি না।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অভিযুক্ত শহিদুল ইসলামকে একাধিকবার কল দেওয়া হলে ধরেননি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মনিরুজ্জামান মনি বলেন, সেদিন আমি আমাদের দলের একটি প্রোগ্রামে ছিলাম। কখন কি হয়েছে না হয়েছে এসব বিষয়ে কিছুই জানি না। তিনি শুধু শুধু আমাকে জড়িয়েছেন। শহিদুল ইসলামের সাথে তার সমস্যা চলছে বলে জেনেছি। উনার বাড়ির ব্যালকনি একটু বাইরে আসায় তিনি অভিযোগ দিয়েছেন। এতে তার কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না এইটুকুই জানতে চেয়েছি এর বেশি কিছু না।

শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, এরকম ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। তারা মামলা করতে এসেছিল কিন্তু কোনো সন্দেহজনক কাউকে বলতে পারেনি। এবং তাদের কথাতে অনেক অসঙ্গতিও পাওয়া গেছে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম কথা বলছেন। তাদের অভিযোগ দিতে বলা হয়েছিল কিন্তু তারা না দিয়ে চলে গেছেন। তারপরও আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি।#