সিল্কসিটি নিউজ ডেস্ক :
তিরিশ বছর পর নিজের বাড়ি ফিরেছেন মেহেরপুর সদর উপজেলার সুবিধপুর গ্রামের রেজিয়া খাতুন (৫৫) । ১০ নভেম্বর (শুক্রবার) ভারতের কাশ্মীর থেকে তাকে নিয়ে আসেন স্বজনরা। স্বামী আজগর আলী ও তার বন্ধু জয়নাল সেখানে তাকে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ তার।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর একই গ্রামের আজগর আলীর সঙ্গে বিয়ে হয় রেজিয়ার কিন্তু স্বামীর সংসার জোটেনি। ৩০ বছর নিখোঁজ ছিলেন তিনি। তার সন্ধান ও বাড়ি ফেরায় স্বজনরা খুশি।
রেজিয়া খাতুন জানান, ৩০ বছর বহু কষ্টের মধ্যদিয়ে কাটিয়েছি। কষ্টের কোনো শেষ ছিল না। আমার পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
রেজিয়ার মেয়ে সালেহা বলেন, ছোটবেলা থেকে মায়ের আদর-স্নেহ বঞ্চিত ছিলাম। সব সময় মাকে ফিরে পাওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম। আল্লাহ আমার স্বপ্ন পূরণ করেছেন।
রেজিয়ার ভাই আলামিন হোসেন বলেন, ৩০ বছর আগে আজগর আলী আমার বোনকে বিক্রি করে দেন। এতোদিন জানতাম তিনি মারা গেছে। তিন মাস আগে একজনের মাধ্যমে জানতে পারি বোন বেঁচে আছেন। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে পাচারকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি।
এদিকে পলাতক রয়েছেন আজগর আলী ও জয়নাল। বিষয়টি জানতে আজগর আলীর বাসায় গেলে কথা বলতে রাজি হয়নি পরিবারের কেউ। আর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করছেন জয়নালের স্ত্রী মোমেনা খাতুন।
মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা জানান, এতোদিন আমরা জানতাম রেজিয়া মারা গেছেন। ৩০ বছর পর জানতে পারলাম বেঁচে আছেন তিনি। বাড়ি ফেরার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের মানুষ তাকে দেখতে ভিড় করছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
দেশে ফিরে দুজনকে আসামি করে আদালতে মানবপাচার মামলা করেছেন রেজিয়া খাতুন। আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। তবে আসামিরা পলাতক। এ বিষয়ে মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম জানান, আদালত মামলাটি এফআইআর ভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি করেন তিনি।