নারী সুরক্ষার চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালো তুরস্ক

২০১১ সালে বিশ্বে প্রথম পারিবারিক এবং অন্যান্য সহিংসতা থেকে নারীদের অধিকার সুরক্ষায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলোকে বাধ্য করতে ইস্তাম্বুল কনভেনশ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে ১৯ মার্চ প্রেসিডেন্সিয়াল ডিক্রীর মধ্য দিয়ে তুরস্ক এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে ।

স্বাক্ষরকারী দেশগুলো পারিবারিক সহিংসতা, বৈবাহিক ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা থেকে নারীদের সুরক্ষা দিতে আইন প্রণয়ন করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৪৫টি দেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত নারী সুরক্ষা বিষয়ক একটি চুক্তি ছিল এটি। এবার সেই চুক্তি থেকেই বের হয়ে গেল তুরস্ক।

রক্ষণশীলদের দাবি, এই  চুক্তির কারণে পারিবারিক ঐক্য নষ্ট হচ্ছে, বিচ্ছেদ উৎসাহিত হচ্ছে আর এতে বর্ণিত সমতার নীতি ব্যবহার করে সমকামী সম্প্রদায় সমাজে আরও গ্রহণযোগ্যতা লাভ করছে।

তুরস্কের পরিবার, শ্রম এবং সামাজিক নীতিবিষয়ক মন্ত্রী জেহরা জুমরাত বলেন, ‘নারী অধিকারের নিশ্চয়তা আমাদের আইন, বিশেষ করে আমাদের সংবিধানে রয়েছে। আমাদের বিচারব্যবস্থা বহুমাত্রিক এবং প্রয়োজন পড়লে নতুন আইন প্রণয়নের জন্য যথেষ্ট কঠোর।’

শনিবার (২০ মার্চ) এক বিবৃতিতে ইউরোপের শীর্ষ অধিকার সংগঠন কাউন্সিল অব ইউরোপের সেক্রেটারি জেনারেল মারিজা পেসিনোভিস বুরিস বলেন, ‘নারীদের সুরক্ষায় খুবই উন্নতমানের চুক্তি ছিল এটা। তুরস্কের এই পদক্ষেপ নারী অধিকার নিশ্চিত করার প্রচেষ্টার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।’ তুরস্কের এই সিদ্ধান্তে নিন্দা ও সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো।’

এদিকে, তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়াকে স্বাগত জানালেও এর বিরোধিতা করছে বিরোধী দল সিএইচপি। সিএইচপির ডেপুটি চেয়ারম্যান গোকসে গোকেন এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অর্থ হলো নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখা আর তাদের খুন হতে দেওয়া।’

তুরস্কে নারী হত্যা এবং পারিবারিক সহিংসতা মারাত্মক সমস্যা। নারীর প্রতি সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে আসছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। চলতি মাসেও তিনি বলেছেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা থামাতে কাজ করবে তার সরকার। তবে সমালোচকেরা বলছেন, নারী হত্যা এবং পারিবারিক সহিংসতা থামাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি তার সরকার।’

উল্লেখ্য, নারী হত্যার কোন সরকারি পরিসংখ্যান রাখে না তুরস্ক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, তুরস্কের ৩৮ শতাংশ নারী তার সঙ্গীর কাছ থেকে সহিংসতার শিকার হয়। অথচ বাকি ইউরোপে এর পরিমাণ ২৫ শতাংশ।

 

সুত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন