নারী উদ্যোক্তা তৈরীর খোঁজে রাজশাহীতে জমে উঠেছে পিঠা উৎসব

পিঠা উৎসবে উপচেপড়া ভিড়

হারুন-অর-রশিদ রিহান:

নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে রাজশাহী শাহ মখদুম কলেজ চত্ত্বরে জমে উঠেছে পিঠা উৎসব। রাজশাহী উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে হরেক রকম পিঠার সমাহার নিয়ে দুই দিনব্যাপী এ পিঠা উৎসব আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে জমে উঠেছে। আগামীকাল শনিবার রাত ৮টায় শেষ হবে উৎসব।

মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখা গেছে,  ১৯ টি স্টলে বাহারি নামের বিভিন্ন পিঠার পসরা সাজিয়ে নারী উদ্যোক্তরা বসে আছেন। পিঠা উৎসবের প্রথম দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় তরুণ-তরুণী আর পিঠা রসিকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত।

পিঠা উৎসবে ঘুরতে আসা বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জেসমিন আরা ফেরদৌস বলেন, ‘শীতের দিনে পিঠা উৎসব ছাড়া যেন রাজশাহীর শীত মৌসুম পরিপূর্ণতা পায় না। তাই পিঠা উৎসবের খবর শুনে নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না। বন্ধুদের নিয়ে পিঠা উৎসবে চলে এসেছি। মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখছি আর মজা করে লোভনীয় সব পিঠা খাচ্ছি।’

মেলায় সপরিবারে ঘুরতে এসেছিলেন নগরীর টিকাপাড়া এলাকার বাসিন্দা শরিফ উদ্দিন। তিনি প্রতিবেদকে বলেন, ‘ছুটির দিনে পিঠামেলা শুরু হয়েছে শুনে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছি।  বাড়িতে এতো সব পিঠা তৈরির ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতে এখানে পিঠা খেতে এসেছি। সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যাচ্ছি হরেক রকমের বাহারি স্বাদের বিভিন্ন পিঠা। বিভিন্ন রকম নতুন পিঠার সাথে পরিচিত হতে পেরে ভালো লাগছে। নিয়মিত এমন মেলা হলে গ্রামীণ ঐতিহ্যের অনেক কিছুর সাথে মানুষ পরিচিত হতে পারবে যা এখন বিলুপ্তির পথে। শহরাঞ্চলে এসব পিঠার প্রচলন না থাকলেও এখন এসব পিঠা সবাই দেখতে বা খেতে পারছে আর উপভোগ করতে পারছে বিভিন্ন রকমের পিঠার স্বাদ।’

মেলার আয়োজক কমিটির অন্যতম উইমেন চেম্বার অব কমার্সের ডিরেক্টর আবিদা জেসমিন বলেন, ‘আমরা গত ৪-৫ বছর ধরে পিঠা মেলার আয়োজন করছি। করোনার কারণে গত বছর বন্ধ ছিলো মেলা। তবে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারো আমরা স্থানীয় নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এ মেলার আয়োজন করেছি। তবে এবার একটু ভিন্নভাবে , করোনার কথা মাথায় রেখে রান্না প্রতিযোগিতা বাদ দেওয়া হয়েছে। এবার মেলায় ১৯ টি স্টল রয়েছে।উইমেন চেম্বার অব কমার্স প্রতি বছর এভাবেই বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের তৈরী হতে সহযোগিতা করছে।’

মেলায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তা রকমারি রান্নাঘরের স্বত্বাধিকারী ফারজানা হোসেন রিমা বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে মেলায় স্টল দিতে পেরে। দুই বছর ধরে একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে খাবার হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকি ও বিভিন্ন মেলায় অংশ গ্রহণ করি। এবার দ্বিতীয়বার স্টল দিয়েছি এই মেলায় ।রাজশাহীর মানুষজন আসে খায় , খুব ভালো লাগে। প্রচুর ক্রেতাও আছে এবার মেলায়। তালবড়া ,মালপোয়া গোকুলপিঠা, ডোনাট, পিজ্জা পাই, কেক, হানি চিকেন, কালাই পিঠা, দুধ পুলি , চিকেন বানসহ প্রায় ১৬ রকমের পিঠা এবার আমার স্টলে নিয়ে এসেছি।’

মেলায় শোভা পাচ্ছে হরেক রকমের পিঠা

অপর একজন উদ্যোক্তা ফাহমিদা মাইশা মিলিতা জানান, ‘এবার প্রথম মেলায় স্টল নিয়েছি। নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এমন আয়োজনে অনেক ভালো লাগছে । এতে করে অনেক নারী উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী হবে । এসব আয়োজনের মাধ্যমে নারীরা নিজেদের পরিচিত হবার সুযোগ পাচ্ছে। বুটিকের পাশাপাশি ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে খাবার নিয়েও কাজ করছি। রাজশাহীতে নিয়মিত খাবার হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকি। প্রথমবার বুঝে না উঠায় বিক্রি একটু কম হচ্ছে ,তবে বিক্রি বাড়বে । কুনফা, শাহী ফিরনি,পাটি সাপটা, নকশী পাকনসহ ১০ রকম পিঠা নিয়ে আমার স্টলে শোভা পাচ্ছে।

এএইচ/এস