নামের সাথে ‘প্রিন্স মাহমুদ’ লাগাতে হলে তিন লাখ টাকা অগ্রিম

প্রিন্স মাহমুদ, নব্বই দশক আর শূন্য দশকের অর্ধেক যার দখলে ছিল তিনিই প্রিন্স মাহমুদ। ব্যান্ড মিক্সড, সলো, দ্বৈত, কিংবা জেমস হাসান আইয়ুব বাচ্চু- এমন সমন্বয় প্রিন্স মাহমুদ ছাড়া আর কে করতে পারেন? ব্যান্ড স্বর্ণযুগ আর নেই। তবে প্রিন্স মাহমুদ গান করছেন। বানাচ্ছেন নতুনদের জন্য,মাহাদি, ন্যান্সি, এলিটা, তপু বা এই প্রজন্মের মেধাবীদের নিয়ে যেমন কাজ করছেন করছেন এই সময়ের নামী ব্যান্ড তারকার জন্যও সুর করছেন।

খুব অস্থির সময়ে চলচ্চিত্র, নাটক, ফিল্ম বা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি টানেল অতিক্রম করছে। ঠিক এমন সময়ে অস্থিরতা আরো বাড়িয়ে দিচ্ছেন কিছু নামসর্বস্ব ব্যক্তি। যারা হুট হাট করেই আলোচনায় আসতে চান বা হিট হতে চান- অমিত নেটিজেনদের। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতেও তেমনই অস্থিরতা। এই অস্থিরতা স্পর্শ করার চেষ্টা করছে সুরকার ও গীতিকার প্রিন্স মাহমুদকে। কিন্তু তিনি অবিচল থাকতে স্বীয় স্থানে।

শুক্রবার সকালে এমনই ইঙ্গিত দিলেন। বললেন, একটা গান করতে আমার তিন মাস লাগবে। তিনি বলেন, গান চাইলেই হয় না। একটা গান করতে আমার দুই মাস টাইম লাগে। যারা মেধাবী তারা ঝট করে গান বানায় দিতে পারবে। আমি পারব না আব্বা । ওই দুই মাসে একটা গানই করব।

প্রিন্স মাহমুদ বলেন, নামের সাথে প্রিন্স মাহমুদ নাম লাগাতে হলে তিন লাখ টাকা এডভান্স দিয়ে যাবা। তিন মাস টাইম লাগবে। টাকা নেয়ার পর যদি দেখি গান গাইতে পারছ না। ফিলেই যাচ্ছ না, তাইলে গান পাবা না, টাকা ফেরত। এখন আল্লাদ আর সম্পর্কের জায়গা নাই। ইমোশনাল কথাবার্তা আর নীতিকথা কপচাইলে নিজের মতো কপচাও। বহুত দরদ দেখাইছি আমার প্রতি কেউ দরদ দেখায় নাই…

প্রিন্স মাহমুদ গীতিকার হিসেবে ৯০ দশক থেকে বাংলাদেশে ব্যান্ড শিল্পীদের একক এবং যৌথ অ্যালবামের গান লেখা, সুর করা এবং কম্পোজিশনের কাজ করেছেন তিনি। তার লেখা ও সুর করা একাধিক গান ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ১৯৯৫ সালে ‘শক্তি’ অ্যালবামের মধ্য দিয়ে ব্যান্ড মিক্সড অ্যালবাম প্রকাশ শুরু করেন তিনি।

প্রিন্সের সঙ্গীতের শুরু ছেলেবেলা থেকেই। অনেকটা আড়ালে,অগোচরে পরিবারের ইচ্ছার বাইরে গিয়েই তার গান শেখা এবং গান করা শুরু করেন তিনি। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ব্যান্ডের সাথে জড়িয়ে পড়েন তিনি।“ দি ব্লুজ” নামের একটি ব্যান্ডের ভোকালিস্ট ছিলেন বেশ কিছু দিন। তারপর কলেজের গন্ডি পেরিয়ে শুরু করেন পুরো দমে কম্পোজিশন।

গান কম্পোজিশনের পাশাপাশি তিনি গানও লেখা শুরু করেন। সংগীতের ভূবনে প্রিন্সের এর পথ চলা শুরু হয় ৮০র দশকের একেবারে শেষ প্রান্তে এই ‘দ্যা ব্লজ’ ব্যান্ড এর ভোকাল ও গিটারিস্ট হিসেবে। এরপর ৯০ দশকের শুরুতে প্রিন্স গঠন করেন ‘ফ্রম ওয়েস্ট’ নামক একটি ব্যান্ড যেখানে ব্যান্ড লিডার এবং মূল ভোকাল ছিলেন তিনিই। সেই ব্যান্ড এর আলোচিত একটি গান ছিল রাজাকার আলবদর কিছুই রইবো নারে/উপরে দালাল ভিতরে চোর কিছুই হইবো নারে/সব রাজাকার ভাইসা যাইবো বঙ্গোপসাগরে গানটি।

ফ্রম ওয়েস্ট এর প্রকাশিত প্রথম অ্যালবাম এর নাম ছিল ‘সে কেমন মেয়ে’। প্রিন্স মাহমুদের সর্বশেষ দুর্দান্ত জনপ্রিয় ব্যান্ড মিক্সড ছিল ‘দেবী।’ যেখানে যদি হিমালয়, ও বন্ধু তোকে মিস করছি ভীষণ এর মতো জনপ্রিয় গান ছিল।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ