নাটোর-১ আসনে মনোনয়ন নিয়ে মাথাচাড়া দিয়েছে দেবর-ভাবীর দন্দ্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক,নাটোর:
নাটোরের লালপুর উপজেলায় আওয়াম লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম ও তাঁর বড় ভাই শহীদ মমতাজ উদ্দিনের স্ত্রী শেফালী মমতাজের দ্বন্দ্ব হটাৎ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাবেক এই নারী সাংসদ তাঁর সমর্থকদের নিয়ে পুলিশি পরিবেষ্টিত হয়ে মোটরসাইকেল শোভযাত্রা ও পথসভা করেছেন। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করে তিনি নৌকা প্রতিকে ভোট চেয়ে বক্তৃতা করেছেন।

 
দলীয় সূত্র জানায়, নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সাবেক সাংসদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মততাজ উদ্দিন আততায়ীর হাতে নিহত হওয়ার পর গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাঁর স্ত্রী শেফালী মমতাজ নারী সাংসদ নির্বাচিত হন। এ সময় ওই আসনে তাঁর ভাই অ্যাডভোকেট আবুল কালাম দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যার্থ হন। বর্তমান সংসদ নির্বাচনের সময় দেবর মো.আবুল কালাম  ও ভাবি শেফালী মমতাজ উভয়েই দলীয় মনোনয়ন চান। উভয়ের কর্মী সমর্থকরা পরস্পরবিরোধী প্রচার প্রচারণায় অংশনেন। এতে উভয়ের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রুপ নেয়। শেষ পর্যন্ত দল আবুল কালামকে দলীয় প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দেয়। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তিনি নির্বাচিতও হন। ফলে উভয়ের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব অন্তরালে থাকলেও তা এতদিন প্রকাশ্যরুপ নেয়নি।

 


অবশেষে শেফালী মমতাজ মঙ্গলবার আবারও জনসংযোগে নামছেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ খবরে প্রশাসন ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার সকালে জেলা সদর থেকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ লালপুরে পাঠানো হয় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। পুলিশের পক্ষ থেকে শেফালী মমতাজের কর্মসূচি বন্ধের প্রস্তাব দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি বলে জানা গেছে।

 
দুপুর ১২টার দিকে তাঁর নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে গোপালপুর নর্থবেঙ্গল সুগার মিল এলাকায় পৌঁছান। সেখানে পুলিশ তাঁদেরকে আটকে দিলে তাঁরা মোটরসাইকেল রেখে মিছিল নিয়ে গোপালপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন টেম্পুস্টেন্ডে জড়ো হন। সেখানে গোপালপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুখসানা মোর্তুজার সভাপতিত্বে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মাজেদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আজিজুর আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম মোর্শেদ, শহীদ মমতাজ উদ্দিনের ছেলে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ।

 
সভায় শেফালী মমতাজ বক্তৃতায় বলেন,আমি শহীদ মমতাজ উদ্দিনের স্ত্রী। আমি নিজেও আওয়ামী লীগের সাংসদ ছিলাম। অথচ দল ক্ষমতায় থাকাবস্থায় আমাকে পুলিশ পরিবেস্টিত হয়ে মিছিল মিটিং করতে হচ্ছে। এটা অন্যায়, এটা অনুচিত।’ তিনি আরও বলেন,‘আগামি সংসদ নির্বাচনে আমি এই আসন থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দলীয় মনোনয়ন চাইবো। নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিলে আপনারা আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিবেন।’


সভাপতির ভাষণে রুখসানা মোর্তুজা বলেন,বিএনপির সময় আওয়ামী লীগ-বিএনপি দ্বন্দ্ব হয়েছে। কিন্তু এখন আমাদের দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এ কারণে গত পৌরনির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরও কিছু আওয়ামী লীগ নেতার কারণে মেয়র পদে নির্বাচন করে হারতে হয়েছে এটা সবাইকে ভাবতে হবে।

 
পুলিশের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অভিযোগ প্রসঙ্গে লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ওবায়েদ বলেন, আমরা জনগণের শান্তি শৃংক্ষলা বজায় রাখার জন্য দায়িত্ব পালন করেছি। কোন বাড়াবাড়ি করিনি।
তবে সংসদ সদস্য আবুল কালাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে পরে বলবেন বলে জানান।

স/শ