নাটোরের পৌর নির্বাচন: চলছে হত্যা মামলার বাদী-আসামির লড়াই (ভিডিওসহ)

মাহাবুব হোসেন:

নির্বাচন নয়, একটি মামলার বাদী ও আসামীর মর্যাদার লড়াই যেন বনপাড়া পৌরসভার নির্বাচন। ৫ বছর পর আবারও তারা দুই জনেই প্রার্থী নৌকা ও ধানের শীষের। বৃহষ্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। আলোচিত এ নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সানাউল্লাহ নূর বাবু হত্যা মামলার প্রধান আসামী ও ধানের শীষ প্রতীকে মামলার বাদী বাবুর স্ত্রী মহুয়া নুর কচি। এই নির্বাচনে অতীতের উন্নয়ন কর্মকান্ডের তুলনায় অতীত ইতিহাসকেই যেন প্রাধান্য পাচ্ছে ঘুরে ফিরে। ২০০২ সালের ২৭ মার্চ স্বেচ্ছাসেবক দলের বড়াইগ্রাম উপজেলা কমিটির আহবায়ক আব্দুল আলীম খুন হয়।

তার পরের দিনই খুন হন সে সময়ের আওয়ামীলীগের সভাপতি জাকিরের পিতা ডা: আয়নাল হক। আলোচিত হত্যাকান্ডের বছর আটেক পর ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর বনপাড়া বাজারে মেয়র প্রার্থী কচির স্বামী উপজেলা চেয়ারম্যান সানা উল্লাহ নুর বাবুকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হয়। সেসময় আজকের দানের শীষের প্রার্থী মুহুয়ার নুর কচি বর্তমান নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কেএম জাকির ১নং ও খোকন মোল্লাকে ২নং আসামী করে বড়াইগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

২০১১ সালে বনপাড়া পৌর নির্বাচনে হত্যা মামলার আসামী হয়ে কেএম জাকির প্রার্থী হয় আওয়ামীলীগের। আর বিএনপির প্রার্থী হয় মহুয়া নুর কচি। সেসময় মাত্র ৪০ ভোটে পরাজিত হয় কচি। তারপর থেকেই বনপাড়া পৌরসভা নির্বাচনটি বড় দুই দলের কাছে মর্যাদার লড়াই।

এমন বাস্তবতায়, বনপাড়া পৌরসভা এবং জোয়ারী ও মাঝগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে ভোট কেন্দ্রগুলোর প্রিজাইডিং অফিসার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে রিটার্নিং অফিসার এসব সামগ্রী হস্তান্তর করেন। আগামীকাল ২৮ ডিসেম্বর উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার ১২ টি কেন্দ্রের ৬৭ টি কক্ষে এই ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করা হবে। তবে মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।

পৌরসভার ১২ টি ওয়ার্ডের মোট ২১ হাজার ৩০৯ জন ভোটার নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার কথা। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ১০ হাজার ৫শ’৪১ জন এবং নারী ভোটার ১০ হাজার ৭শ’৬৮ জন। জেলা নির্বাচন অফিসার ও বনপাড়া পৌলসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার আবুল হোসেন জানান, এইসব কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য ৮ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্বে সশস্ত্র পুলিশ সহ ১শ’৪৪ জন পুলিশ সদস্য, ৬শ’১২জন আনসার ব্যাটেলিয়ন, ভিডিপি ও সাধারণ আনসার নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া ১২ প্লাটুন বিজিবি এবং র‌্যাব সদস্যরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবেন।

উল্লেখ্য, বনপাড়া পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বর্তমান মেয়র কেএম জাকির হোসেন ও বিএনপি প্রার্থী মহুয়া নূর কচি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৩ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে ১নং জোয়ারী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং ৫নং মাঝগাঁও ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১২ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

স/শ