নাটোরে পুলিশ নিয়োগে প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ আটক ৭

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাটোরে পুলিশসহ বিভিন্ন চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতাসহ ৭ প্রতারক সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ৩৬টি ফাঁকা স্ট্যাম্প, ১৬টি চেক এবং পুলিশসহ বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার প্রবেশপত্র জব্দ করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ৪ জন দালাল ও ৩ জন চাকরিপ্রার্থী রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

শুক্রবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে নাটোর পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। আটককৃতরা হলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে নাইম ইসলাম, গুরুদাসপুর উপজেলার যোগেন্দ্রনগর গ্রামের জামাল প্রামানিকের ছেলে রাব্বী আলী ও একই উপজেলার সাহাপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুল হাদি। এরা তিনজন পরীক্ষার্থী ছিলেন।

এছাড়া চারজন দালাল হচ্ছে, বড়াইগ্রাম উপজেলার মারিয়া গ্রামের সাইদুল মন্ডলের ছেলে ফজলুর রহমান ওরফে রনি, গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর গ্রামের সামছুল মন্ডলের ছেলে রেজাউল ইসলাম, রফিকুল ইসলামের ছেলে সুমন আলী এবং সিংড়া উপজেলার বিলদহর গ্রামের হারান মন্ডলের ছেলে রওশন মন্ডল।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২২ ও ২৩ জুন নাটোর জেলায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে শারীরিক, লিখিত এবং পরীক্ষায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় নাইম ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থীর সাথে সংরক্ষিত ছবি এবং আঙ্গুলের ছাপ মিল পায়নি পুলিশ। একইভাবে রাব্বী আলী এবং আব্দুল হাদীর সাথে মূল পরীক্ষার্থীর ফিঙ্গারের মিল হয়নি। পরে পরীক্ষার্থী নাইম ইসলামকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জ্ঞিাসাবাদে নাইম একসময় পুরো প্রতারক চক্রের ঘটনা বিস্তারিত বলেন পুলিশের কাছে।

পরে নাটোর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত এর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম এবং নাটোর সদরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। পরে পুলিশসহ বিভিন্ন চাকরি দেওয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতা ফজলুর রহমান ওরফে রনিসহ মোট ৭ জনকে আটক করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার বলেন, এই চক্রটি সারাদেশেই পুলিশসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি করে থাকে। মূলত তারা ফাঁকা ১০০ টাকার স্ট্যাম্প এবং বিভিন্ন ব্যাংকের চেক এ চাকরিপ্রার্থীদের সাথে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায় চুক্তি করে। চুক্তির পর মূলহোতা রনির কথিত মামা গডফাদার আলতাব হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবি শিক্ষার্থীদের দিয়ে একজনের পরিবর্তে অন্যজনকে পরীক্ষা দেওয়ায়। যেটা বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ছাড়া সনাক্ত করা সম্ভব নয়।

আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

স/শা