নাটোরে গোডাউনে পচা চাল, থানায় মামলা করার নির্দেশ আদালতের

নাটোর সদর উপজেলার খাদ্য গোডাউনে ৫৯১ বস্তা পচা ও নিম্নমানের চাল সরবরাহের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার বিকালে নাটোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক এএফএম গোলজার রহমান আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে সদর থানায় দোষীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতকে অবহিত করার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, গত ১২ আগস্ট নাটোর সদর উপজেলার ৬নং খাদ্য গোডাউনে নাটোর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলালুজ্জামান বেলু তিনজন মিলারের নাম করে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ এলাকার একটি গোডাউন থেকে ট্রাকে করে ৫৯১ বস্তা চাল নিয়ে খাদ্য গোডাউনে আসেন। ট্রাকের দুই পাশে ভাল চাল থাকলেও ভিতরে বেশির ভাগ চাল ছিল পচা ও নিম্নমানের।

পরে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সংবাদের ভিত্তিতে ওই গোডাউনে অভিযান চালায় নাটোর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফরোজা খাতুন। অভিযান শুরুর আগেই ৫৯১ বস্তার মধ্যে ১৭৪ বস্তা চাল গোডাউনে প্রবেশ করানো হয়। আর বাকি ৪১৭ বস্তা চালসহ ট্রাক জব্দ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

এই ঘটনায় নাটোর সদর থানায় একটি জিডি করেন সদর থানার ওসি তদন্ত আব্দুল মতিন। পরে জিডির কোনো সুরাহ না হওয়ায় জিডির কপি, জব্দ তালিকা, জেলা প্রশাসক বরাবর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পাঠানো অবহিতকরণ পত্র এবং প্রকাশিত সংবাদের কপি দিয়ে আদালতকে অবহিত করেন ওসি তদন্ত আব্দুল মতিন।

আদালত সকল কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে সোমবার বিকালে নাটোর সদর থানায় দোষীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করে আগামী ২৫ আগস্টের মধ্যে আদালতকে অবহিত করার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নাটোর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন যুগান্তরকে বলেন, বিজ্ঞ আদালতের আদেশ হাতে পেয়েছি। পুলিশ সুপারের মতামত নিয়ে আদালতের দেয়া সময়ের মধ্যেই মামলা রুজু করে আদালতকে অবহিত করা হবে। গত ১ ও ১৩ আগস্ট যুগান্তরে নাটোরের সরকারি খাদ্য গোডাউনে পচা চাল সরবরাহের দুটি সংবাদ ছাপা হয়।

অপরদিকে নাটোর খাদ্য গোডাউনে পচা ও নিম্নমানের চাল প্রবেশ করানোর  ঘটনায় ১২ আগস্ট তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা খাদ্য বিভাগ। সিংড়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস ছালাম বিশ্বাসকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এছাড়া কমিটির সদস্য করা হয়, লালপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ডালিম কাজী এবং কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক আল সিহাবুল ইসলামকে। এই তদন্ত কমিটি কারণ অনুসন্ধান করে গোডাউনে প্রবেশ করানো ১৭৪ বস্তার মধ্যে ৪৯ বস্তা চালই পচা ও নিম্নমানের পায়। তবে ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত সে বিষয়ে উল্লেখ না করেই জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়।

পরে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রবীন্দ্রলাল চাকমা রাজশাহী বিভাগীয় আঞ্চলিক অধিদপ্তরে তদন্ত রিপোর্টটি পাঠিয়ে দেন। ঘটনার ১২ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি খাদ্য বিভাগ। বরং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা করার অভিযোগ রয়েছে।

খাদ্য দপ্তরের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, নিয়ম অনুযায়ী পচা চাল পরিবর্তন করে গোডাউনে ভাল চাল দিয়ে দিলেই আর কোনো সমস্যা নেই।

সূত্র: যুুুগান্তর

স/রি