নাটোরের স্কুল ছাত্র অন্তু হত্যা: একজনের ফাঁসি, খালাস ২

নিজস্ব প্রতিবেদক,নাটোর:

নাটোরের আলোচিত ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্র অনন্ত চক্রবর্তী অন্তু (১১) হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া অপর দুই আসামীকে খালাস দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রেজাউল করিম এই রায় প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী হচ্ছে,হালসা গ্রামের নেকবর মুন্সির ছেলে আশরাফ আলী (২৮।

 

এ সময় আলোচিত অন্তু হত্যার আসামীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হওয়ায় সন্তোষ জানিয়েছেন অন্তুর পরিবার।

 

আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৩১মে বিকেলে সদর উপজেলার হালসা  গ্রামের অশোক কুমার চক্রবর্তীর ছেলে হালসা হালসা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র অনন্ত কুমার চক্রবর্তী অন্তু (১১)প্রাইভেট পড়ার উদ্দ্যেশে বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় ওই এলাকার আশরাফুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল মামুন ও শাজাহান আলীসহ কয়েকজন তাকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অপহরণকারীরা অন্তুকে দিয়ে তার বাবা অশোক চক্রবর্তীর মোবাইল ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

 

পরে অশোক কুমার চক্রবর্তী তার ছেলে অপহরণের বিষয়টি নাটোর থানায় অবহিত করলে পুলিশ ও র‌্যাব ত্বরিত গতিতে অভিযান শুরু করে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে যায়। সময়সীমার আগেই অন্তুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে র‌্যাব-৫ এর একটি দল ও নাটোর থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ওই দিন রাতেই তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে আইনশৃংখলা বাহিনীরা। পরে র‌্যাবের কাছে আসামীদের দেওয়া তথ্য অনুয়ায়ী র‌্যাব সদস্যরা রাত ১২টার দিকে হালসা মাদ্রাসার পাশে অপহরণকারী আশরাফুল ইসলামের পানের বরজের মধ্যে মাটিতে পুঁতে রাখা অন্তুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে।

 

এই ঘটনায় অন্তুর বাবা হালসা গ্রামের আকবর আলীর ছেলে আশরাফ আলী (২৬), মহসিন আলীর ছেলে শাহজাহান আলী (৩০) ও সোলেমান আলীর ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুনকে (২৫) আসামী করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট ১৪জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন করা হয়। পরে মামলার দীর্ঘ স্বাক্ষ্য প্রমান শেষে বৃহস্পতিবার নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারক রেজাউল করিম আসামী আশরাফুল ইসলামকে একই মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় যাবজ্জীবন এবং ১০হাজার টাকা জরিমানা করেন।

 

এছাড়া ৮ধারায় মৃত্যুদণ্ড এবং ১০হাজার জরিমানা, অপর একটি ধারায় মৃত্যুদণ্ড এবং ১০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অপর আরেকটি ধারায় ৫বছর কারাদণ্ড এবং ১হাজার টাকা জরিমানা করার আদেশ দেন। এছাড়া অপর দুই আসামীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

 

আসামী পক্ষের আইনজীবি স্পেশাল পিপি শাহজাহান কবির সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, আলোচিত অন্তু হত্যা মামলার আসামীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা আগামী সাত দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ পাবেন।

স/শ