নাটোরের প্রশ্নপত্র ফাঁস: আ’লীগ নেতাসহ আটক ১৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর:
নাটোরের লালপুরে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতা সহ ১৩জনকে আটক করেছে র‌্যাব-৫। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে লালপুর উপজেলার কদিমচিলানের চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। নাটোর র‌্যাব-৫ এর মেজর কমান্ডার শিবলী মোস্তফার নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নজরুল ইসলামের উপস্থিতিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে ১০জন পরীক্ষার্থী রয়েছে।

বর্তমানে আটককৃতদের লালপুর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আটককৃতরা হচ্ছে, কদিমচিলান ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি হাসান আলী (৫০), যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা (৩৫) ও সোহেল রানার স্ত্রী কলসনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌশ রুনা (৩২) কে রসায়ন প্রশ্ন পত্র সহ তাদের হাতেনাতে আটক করা হয়। এছাড়া ১০ জন পরীক্ষা শিক্ষার্থী হচ্ছে, কলসনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের তাহমিনা খাতুন ( ১৫), আছিয়া খাতুন (১৫), জান্নাতুল ফেরদৌশ (১৫), নুরে জান্নাত (১৫), সুমি খাতুন (১৫), রতœা খাতুন (১৫), নাসরিন জাহান নিপা (১৫) , জিসান কাজী নিবিড় (১৭) ও হাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাসুমা খাতুন (১৫), সৈকত সরকার (১৭)।

র‌্যাব-৫ জানায়, বেশ কিছু দিন একটি চক্র ফেসবুকের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছে। এই চক্রকে ধরতে র‌্যাব সদস্যরা অভিভাবক ও শিক্ষার্থী সেজে একটি ফেসবুক গ্রুপের সাথে যোগাযোগ করে। পরে ঢাকা থেকে ফাঁস হওয়া রসায়ন বিষয়ের প্রশ্নপত্র এক পরীক্ষার্থীর মোবাইলে আসলে, ওই কেন্দ্রের বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র নিয়ে স্যলুশান তৈরী করছিলেন। এসময় র‌্যাব সদস্যরা মোবাইলে আসা প্রশ্নপত্রের সাথে মূল প্রশ্নপত্রের হুবুহু মিল খুঁজে পায়, পরে ১০জন শিক্ষার্থী মোট ১৩জনকে আটক করে র‌্যাব-৫ সদস্যরা।

অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে লালপুরের কলসনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এই বছরই চাঁদপুর -১ নং উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্র স্থানান্তর করা হয়। সে কারনেই নতুন কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ ছিল আগে থেকেই। আর এই চক্রটি প্রতিদিন পরীক্ষা শুরুর এক ঘন্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করে আসছিলো।

র‌্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর শিবলি মোস্তফা বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বেশ কিছু তথ্য আগে থেকেই র‌্যাবের কাছে ছিল। যার কারনে আজকে অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ শিক্ষার্থী সহ মোট ১৩জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য নেয়া হয়েছে। কারা কারা এই চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে তাদেরকেও গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।

লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগে শিক্ষার্থীরা ফেসবুকের মাধ্যমে রসায়ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পায়। আর মোবাইল ফোনে পাওয়া সেসব প্রশ্নপত্র দেখে স্যলুশন তৈরী করছিল। এসময় বেশ কিছু মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। পরে আটককৃত শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বৃহৎ একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে।

 

 

স/আ