নাটোরের নলডাঙ্গায় এক প্রতিবন্ধী নারীর ঘরবাড়ি ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক,নাটোর:

নাটোরের নলডাঙ্গায় বরাদ্দকৃত খাস জমি থেকে এক প্রতিবন্ধী নারীর বসত বাড়ি ভেঙ্গে চুরমার করে ঘরের টিন নিয়ে গেছে প্রভাবশালীরা। এ সময় বাধা দেয় মারপিট করা হয়েছে তার অন্তঃসত্বা পুত্রবধূ ও নাতিকে। সোমবার দুপুরে নলডাঙ্গার বাসুদেবপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ৮ মাসের অন্তঃসত্বা গৃহবধূকে মোমেনা বিবিকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে সেখানে ভর্তি করতে বাঁধা দেয় প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির লোকজন। পরে সংবাদ কর্মিরা বিষয়টি আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে জানালে তিনি ভর্তির ব্যবস্থা করেন।

 
ঘটনার শিকার প্রতিবন্ধী কুলসুম বেওয়া ও মৃত রইস উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন জানান, বাসুদেবপুর এলাকার ওই খাস জমিটি ১৯৯১ সালে তার বাবা ও মায়ের নামে বরাদ্দ দেয় সরকার। কিন্তু এরপর থেকেই জায়গাটি নিজেদের বলে দাবী করে আসছিল শামসুল হক। এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা চলছিল। সম্প্রতি শামসুল হক সেখানকার ৬ শতাংশ জায়গা জোরপূর্বক দখল করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করার চেষ্টা করে।

 

হেলাল জানান, তারাও জমির দুই শতাংশে কাচা বাড়ি করে বসবাস করে আসছিল। কিন্তু শামসুল হকের লোকজন তাদের ওই জায়গা থেকে উচ্ছেদের জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আসছিল। সোমবার সকালে ডাব বিক্রেতা হেলাল মামলার নির্ধারিত তারিখ থাকায় বাড়ি থেকে আদালতের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যান। দুপুরে শামসুল হকের লোকজন বাড়িতে ভাংচুর করা হয়।

 

এ সময় বাড়ির একটি টিনের কাচা ঘর ও রান্না ঘরে ভাংচুর করে ঘরের টিনের চালা ও বেড়া বাড়িতে নিয়ে যায়। এছাড়া বাড়িতে থাকা নগদ টাকাও লুট করা হয় বলে দাবী হেলালের। এ সময় বাধা দিতে গেলে মারপিট করা হয় কুলসুম বেওয়ার পুত্রবধূ ৮ মাসের অন্তঃসত্বা মোমেনা বিবি ও তার সন্তান মাহফুজুর রহমানকে। পরে তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। খবর পেয়ে হেলাল তার স্ত্রীকে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও বাধ সাধে শামসুল হকের লোকজন। পরে তিনি তার স্ত্রীকে একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। বিষয়টি সংবাদকর্মিদের নজরে আসলে তা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে জানানোর পর তিনি ওই রোগীর ভর্তির ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে মোমেনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসারত।

 

এদিকে প্রভাবশালীদের ভয়ে পরিবারটি এখন বাড়িছাড়া। এ ব্যাপারে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, এখনো কেউ থানায় অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তবে জমি নিয়ে মামলা মোকদ্দমা আছে বলে তিনি জানান।

 

এদিকে জমির মালিকের ভাগ্নে আখলাকুর বাবু সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ওই জমিটি তাদের। ভুলবসত জায়গাটি খাস খতিয়ানে গিয়েছিল পরে মামলায় তারা নিজেদের পক্ষে রায় পেয়েছেন। সরকার এ ব্যপারে আপিল করেছে তা চলমান। এর মধ্যে রাতের অন্ধকারে হেলাল সেখানে ঘর নির্মাণ করেছে। তবে কারা  এ ভাংচুর চালিয়েছে তিনি তা জানেন না।

স/শ