নজরুল সংগীত তরুণদের কতটা টানছে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কবি কাজী নজরুল ইসলাম কারও কাছে বিদ্রোহের কবি, কারও কাছে প্রেমের কিংবা তারুণ্যের কবি। নজরুলের রচনায় এসব কিছুই প্রমাণ মেলে।

 

কবি নজরুলের বিভিন্ন দিক বিভিন্ন মানুষকে আলোড়িত কিংবা আন্দোলিত করেছে।

 

গান এবং কবিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিল্পীরা নজরুল মেলায় এভাবেই বাংলাদেশের জাতীয় কবিকে তুলে ধরছেন।

 

নজরুল সংগীত শিল্পীদের আয়োজনে ঢাকার বাংলা একাডেমিতে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে তিন-দিনব্যাপী কবি নজরুল মেলা।

 

বাংলাদেশের জাতীয় কবির কাজ দেশের প্রতিটি জেলায় আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য থেকেই এ আয়োজন।

 

শিল্পীরা বলছেন, দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় তরুণরা যাতে নজরুল সংগীত শিখতে আগ্রহী হয় সেজন্য তারা কাজ করবেন।

 

কিন্তু এ ডিজিটাল যুগে তরুণদের কতটা টানতে পারছে নজরুল সংগীত?

 

চাঁদপুরের নজরুল সংগীত শিল্পী রুপালী চম্পক মনে করেন, তরুণরা নজরুল সংগীত শিখতে আগ্রহী। কিন্তু এ সংগীত নিয়ে তাদের মনে এক ধরনের ভয় কিংবা দ্বিধা কাজ করে।

_92115281_img_3655

রুপালী চম্পক বলেন, “ইদানিং নজরুল গীতির ক্ষেত্রে রেস্ট্রিকশনটা বেড়ে গেছে। আমার মেয়ে বলে, নজরুল গীতি গাইতে ভয় পাই। এই বুঝি কেউ বলল আমার ভুল হয়েছে।”

 

তিনি বলেন, একজন ওস্তাদের কাছে নজরুল সংগীত শিখলে আরেকজন ওস্তাদ ভুল ধরে।

 

নজরুল সংগীতের চর্চা এখনো অনেকটা শহর কেন্দ্রীক বলে মনে করেন অনেক শিল্পী। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে আয়োজনগুলো নজরুলের জন্মবার্ষিকী কিংবা মৃত্যুবার্ষিকীকে কেন্দ্র করেই হচ্ছে।

 

নজরুল মেলায় আসা শিল্পীরা আলোচনা করছেন জেলা পর্যায়ে কীভাবে এ সংগীতকে আরো ছড়িয়ে দেয়া যায় ।

 

মেলার আয়োজনকারী সংগঠন নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজিত মুস্তাফা বলেন ঢাকার বাইরে আরো বেশি স্টেজ শো করার মাধ্যমে নজরুল সংগীতকে তারা আরো ছড়িয়ে দিতে চান।

 

তিনি বলেন, “লোকাল যারা ধনী ব্যক্তি আছেন, যারা কালচারাল মাইন্ডের, একেক জন যদি একেকটা প্রোগ্রাম স্পন্সর করেন, তাহলে প্রতি জেলায় আমরা মাসে একটা শো করতে পারবো।”

 

সময় ও কালের ব্যবধানে নজরুল কি এখনকার প্রজন্মের কাছে দুর্বোধ্য?

 

গবেষকরা বলেন, নজরুলের সৃষ্টি সবসময়ের এবং সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য – এ আবেদন ফুরিয়ে যাবার নয়।

_92115285_20161027_134207

সে আবেদনকে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ছড়িয়ে দিতে হবে বলে মনে করেন কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতনি খিলখিল কাজী।

 

খিলখিল কাজি বলেন, “দাদু নিজেও ইন্সট্রুমেন্টাল পছন্দ করতেন। আমার মনে হয় নজরুলের সুর ঠিক রেখে আমরা যদি ইন্সট্রুমেন্টাল-ওয়েতে এগুলো পরিবেশন করি, তাহলে নতুন প্রজন্ম অবশ্যই নজরুলের গান শুনবে।”

 

“কেন আমরা নজরুলের গান মডিফাই করবো না? অনেক গুরুজন একটা গোঁড়ামি করেছেন যে নজরুলের গানে হাত দেয়া যাবেনা। কিন্তু তা নয়। সুরে হাত দেয়া যাবেনা। সুরকে বিকৃত করে ফিউশন করা যাবেনা।”

 

আয়োজকরা বলছেন কবি নজরুলের কাজকে ধারাবাহিকভাবে এক প্রজন্ম থেকে অপর প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে চান তারা। সেজন্য নজরুলকে কেন্দ্র করে আরও বেশী আয়োজনই পারে সে ধারা অব্যাহত রাখতে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা