নগরীতে ফ্রিজ কেনার ধুম

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় কোরবানি করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। ঈদ উপলক্ষে কোরবানির পশু ও নতুন পোশাকের চেয়ে বেশি আগ্রহ থাকে ফ্রিজে। বিশেষত যাদের ঘরে ফ্রিজ নামের এই ইলেক্ট্রিক সামগ্রিটি নেই। তাই ঈদে কেনাকাটার কোরবানির পশুর পরেই ফ্রিজের স্থান দিয়েছে।

তাই রাজশাহীতে কোম্পানিগুলোর শো-রুমে ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে দিচ্ছে অফারও। কোরবানি দেয়া পশুর মাংস সংরক্ষণ করতে হবে ফ্রিজে। তাইতো পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফ্রিজের চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে। কোরবানির ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে ফ্রিজ কেনার ধুম।

বিক্রেতারা জানান, ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে এবার প্রচুর পরিমাণে ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে। এবারের ঈদে ১৫০ থেকে ২শ লিটার ওজন ধারণক্ষমতার ফ্রিজ ও ডিপ ফ্রিজের বিক্রি সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। ফ্রিজ বেচা-কেনা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। নগরীর সাহেববাজার কেন্দ্রিক শো-রুমগুলোতে এখন বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে ক্রেতাদের। বিভিন্ন কোম্পানির শো-রুম ঘুরে দাম পরখ করে সবাই সেরা পণ্যটিই কিনছেন পরিবারের জন্য।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নগরীর স্যামসাং, ওয়াল্টন, সিঙ্গার, মারসেল, এলজি ও বাটারফ্লাইসহ বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের ইলেট্রনিক্স শো-রুমে কেনা-বেচা জমেছে।

নগরীর আলুপট্টি এলাকার ওয়াল্টন শো-রুমের ম্যানেজার আলতাব বলেন, ওয়াল্টন দেশি ব্যান্ড। অনেক ভালো চলছে। গত বছর নির্দিষ্ট দুই-একটি মডেলের ফ্রিজ বেশি বিক্রি হয়েছে। এবছর ওয়াল্টনের সব ধরনের ফ্রিজের বেশ চাহিদা রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি বিভিন্ন মডেলের ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে। এখনো ঈদের ১০ দিনের মতো বাকি। আরো তিন থেকে চার দিন পরে পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে। ওয়াল্টনের সব ধরনের পণ্য কিস্তিতে বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ফ্রিজও বিক্রি করা হচ্ছে।

ফ্রিজ কিনতে আসা রোমানা ইসলাম বলেন, সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। ঈদ আসলে বিভিন্ন ফ্রিজের উপরে ডিসকাউন্ট দেয় কোম্পানিগুলো। তাই কিনছি ফ্রিজ। পরিবারের ফ্রিজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি আরো বলেন, সব সময় আর রান্না করা যায় না। আবার খাবার বেশি রাখার সমস্যা হয়। একটা ফ্রিজ থাকলে সব ঝামেলা থেকে মুক্তি।

নগরীর সাহেববাজার এলাকার সিঙ্গার শো-রুমে আসা গৃহিণী লায়লা বানু বলেন, একটি ফ্রিজ শুধু দৈনন্দিন গৃহস্থালির প্রয়োজন মেটায় না। গৃহের সৌন্দর্য বর্ধনেও ভূমিকা রাখে। যে ফ্রিজ দেখতে যতও সুন্দর, দামে কম এবং টেকসই সেসব ফ্রিজেরই কদর বেশি।

সিঙ্গার রাজশাহী সাহেববাজার শাখার ম্যানেজার কাজি সিরাজুল ইসলাম জানান, নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত ও বিত্তশালী লোকজনের মাঝেও চলছে সাধ্যমত ইলেক্ট্রনিক পণ্যের কেনা-কাটা। সিঙ্গারের প্রতিটি পণ্যের (ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী), উপর সব্বোর্চ ২০% ছাড় দেয়া হচ্ছে। ৫০ থেকে ৬০টি ইলেক্ট্রনিক পণ্য রয়েছে। এর মধ্যে ঈদকে ঘিরে ডিপ ফ্রিজ ও নরমাল ফ্রিজেরই চাহিদা বেশি।

এলজি বাটার ফ্লাইয়ের সাহেববাজার শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার সানজিদা পারভীন জানান, ঈদে স্ক্রাচ কার্ডে বিভিন্ন পণ্যের উপর আনন্দ অফার রয়েছে। নি¤েœ ৫শ টাকা থেকে শুরু করে ১০০% পর্যন্ত ফ্রি রয়েছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সব সময়ের মত এবারও রেফ্রিজেটর, কালার টিভি, ওভেন’র উপর মানুষের চাহিদা বেশি।

তবে বাজারে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন কোম্পানির আগমনে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। তবুও কোরবানির ঈদকে ঘিরে ফ্রিজের চাহিদাটা শীর্ষে। তাই কেনা-বেচা ভালোই হচ্ছে। চাঁদ রাত পর্যন্ত ধুমধাম করে ফ্রিজ বিক্রি চলবে বলে জানান শোরুমের এই কর্মকর্তা।