নওহাটায় আ’লীগের তৃণমূল সিলেকশন ভোট নিয়ে অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


পবা নওহাটা পৌরসভার আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা বানচাল করে তৃনমূল মেয়র পদপ্রার্থী সিলেকশন ভোট করার অভিযোগ উঠেছে। তবে এ নির্বাচনে অন্য প্রার্থীর উপস্থিতি ছাড়াই প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তুলেছেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল বারি খান।

তিনি জানান, মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) বিকেল চারটার দিকে নওহাটা মহিলা কলেজে পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার কথা ছিলো। সভার এক পর্যায়ে আসন্ন পবার নওহাটা পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল ভোট গ্রহনের কথা তোলেন ফায়সাল আহমেদ রুনু। তবে পৌর নির্বাচনে প্রার্থীতা জানান দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগই উপস্থিত ছিলেন না। তৃনমূল মেয়র পদপ্রার্থী সিলেকশন ভোটের কথা তোলেন রুনু। রুনুর এমন কথায় সভা বয়কট করে বের হয়ে আসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল বারি খান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নানসহ নেতাকর্মীরা।

আবদুল বারি আরও জানান, পৌর আওয়ামী লীগের ৬৫ জন সদস্যের মধ্যে সভায় ৩৪ জন উপস্থিত ছিলেন। রুনুর ভোটের কথা শুনে অনেকেই চলে আসে। পরে কলেজের গেট বন্ধ করে তৃণমূল নির্বাচন করেন রুনু। যদিও এ তৃণমূল সিলেকশন নির্বাচনের কোন কথা ছিলো না। তার পরেও রুনু একক প্রভাব খাটিয়ে এ নির্বাচন করেছে।No description available.

সভাপতি আব্দুল বারি খান আরও বলেন, তাকে অনেকটাই অবরুদ্ধ করে রাখার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে সে কৌশল খাটিয়ে বের হয়ে দ্রুত নওহাটা মহিলা কলেজ ত্যাগ করে। এনির্বাচনে ভোট দেখানো হয়েছে- ফয়সাল আহমেদ রুনু (৩৫) ভোট, আব্দুল বারী খাঁন (২৩) ভোট, হাফিজুর রহমান হাফিজ ( ১) ভোট, মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল ও সারওয়ার জাহান (০) ভোট পেয়েছেন।

তবে এ তৃণমূল সিলেকশন নির্বাচন নিয়ে পৌর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের দাবি- পৌর নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসা যেতো। তবে এই ঘটনা মোটেও ঠিক নয়। এটি আপত্তি বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান জানান, নওহাটা পৌরসভার আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করার উদ্দেশ্যে সভার আয়োজন করি কিন্তু আসন্ন নওহাটা পৌরসভা নির্বাচনের তৃণমূল ভোট গ্রহনের কথা উঠলে আমি অসম্মতি জানিয়ে সভা থেকে চলে আসি। তিনি আরও জানান, পৌরসভা আওয়ামিলীগের কমিটিতে নাই এমন লোক ও ভোট দিয়েছে এবং অনেক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই ভোট বয়কট করেছে।

হাফিজুর রহমান মানজাল জানান, তৃনমুল হোক আর যে কোন ভোট হোক পুর্বে নির্ধারিত তারিখ ঠিক করতে হবে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। ভোট গণনার সময় সকল প্রার্থীর এজেন্ট এবং প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবে, ফলাফল ঘোষনার পর রেজুলেশন করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাক্ষর পর সেটা কার্যকারীতা পায়। সেখানেই আমাদের অনুপস্থিতিতে পরিকল্পিতভাবে এই ভোটের আয়োজন করা হয়েছে এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কোন সাক্ষর ছাড়া সাদা কাগজে রেজুলেশন করে যেটা কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরও জানান, নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগের ৬৫ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির মধ্যে ১১ জন মারা গেছেন এবং ১৫ জন অনুপস্থিত ছিলেন, তাহলে কিভাবে ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি পেল। এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, এটা একটি পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তৃণমূলের ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।

এবিষয়ে ফায়সাল আহমেদ রুনু জানান,  সভা ডেকেছে নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগ। বর্ধিত সভার এজেন্ডা ছিলো তৃণমূলের নির্বাচন। তৃণমূলের সিদ্ধান্তে নির্বাচন হয়। এজন্য পৌর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সিভি ও ৫ হাজার টাকা জমা নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ভোটের শুরুতে সাধারণ সম্পাদক ও ভোটের রেজাল্টের পরে সভাপতি ঘটনাস্থল থেকে চলে আসেন। এছাড়া গত নির্বাচনের আগে পৌর আওয়ামী এমনভাবে বর্ধিত সভায় ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করে থানা ও জেলা আওয়ামী লীগের কাছে জমা দেন। এছাড়া সভাপতি নিজে ও সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ প্রার্থী রয়েছে। তাই তারা এমন অপপ্রচারণ চালাচ্ছে। আমি মনে করি- তৃণমূলের এই নির্বাচন জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ মূল্যায়ন করবে।

স/আ