নওগাঁয় সাংবাদিক নাজমুল হুদার মৃত্যু: হাসপাতাল তত্বাবধায়কের অপসারন দাবীতে স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:

নওগাঁয় সাংবাদিকের মৃত্যুতে সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়কের অবহেলা এবং উদাসীনতাকে দায়ী করে তার অপসারন দাবী স্মারকলিপি দিয়েছেন সাংবাদিকরা। বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিটি জেলা প্রশাসকের হাতে প্রদান করা হয়। জেলাপ্রশাসক মোঃমিজানুর রহমান তাঁর দপ্তরে তা গ্রহন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।
এ সময় জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি কায়েস উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মীর মোশারফ হোসেন জুয়েলসহ সকল সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে নওগাঁ’র সিভিলসার্জন ডাঃ মোঃ মোমিনুল হকের নিকটও স্মারক লিপির একটি অনুলিপি হস্তান্তর করা হয়েছে।

জেলা প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রদত্ত স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কেবলমাত্র সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ রওশন আরা খানম এবং আবাসিক চিকিৎসক ডাঃ মনির আলী আকন্দ-এর অবহেলা আর উদাসীনতার কারনেই ডিবিসি নিউজটিভি’র নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি নাজমুল হুদা মৃত্যু বরণ করেছেন। গত ১৩ এপ্রিল কর্মরত অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে বেলা ১০ টায় নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তত্বাবধায়ক ডাঃরওশন আরাকে একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞকে হাসাপাতালে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ভর্তির ৩ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোন চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা প্রদান করেনি। এমনকি চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তর করার পরামর্শও দেয়া হয়নি। এর ফলে স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সাংবাদিক নাজমুল হুদার মৃত্যু তত্বাবধায়ক ডাঃরওশন আরা খানমের অবহেলার কারণেই হয়েছে বলে সাংবাদিকরা মনে করেন।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, হাসাপাতাল সংলগ্ন এলাকায় উক্ত তত্বাবধায়ক ডাঃরওশন আরা খানমের নিজস্ব একটি ক্লিনিক রয়েছে। হাসপাতালের চেয়ে সেই ক্লিনিকেই বেশী সময় দেন। অন্যদিকে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে হাসপাতাল সময়ে বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিকে চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন। কিন্তু তত্বাবধায়ক নিজের দুর্বলতার কারণে সেসব চিকিৎসকদের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেন না। বরং ঐসব চিকিৎসকদের নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে থাকে বলে ঐ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে।

সাংবাদিকরা এই অবহেলাকে অমার্জ্জনীয় অপরাধ উল্লেখ করে উক্ত তত্বাবধায়ক কে আগামী ৭ দিনের মধ্যে অপসারনসহ চাকুরী বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানানো হয়েছে। একই সাথে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসককে সমান ভাবে দায়ী মনে করে তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানানো হয়েছে। এ দাবি না মানা হলে নওগাঁ’র সাধারণ মানুষদের সাথে নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচী দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাংবাদিকরা।

স/শ