নওগাঁয় বিদ্যালয় সভাপতি কর্তৃক প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত,অবরুদ্ধের অভিযোগ!

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে পছন্দের প্রার্থীকে অনৈতিক ভাবে নিয়োগ না দেওয়ায় নওগাঁ সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলামকে লাঞ্ছিত এবং অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে এসএমসি সভাপতি আবু হাসানের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা শিক্ষা অফিসার, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

রোববার জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর দাখিলকৃত এবং প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ আগস্ট বুধবার স্কুল ম্যানেজিং কমিটির(এসএমসি) সভাপতি আবু হাসান কমিটির কতিপয় সদস্যদের নিয়ে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলামকে বিদ্যালয়ের অফিস রুমে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে সভাপতি তার পছন্দের প্রার্থীকে অনৈতিক ভাবে নিয়োগ প্রদানের জন্য প্রধান শিক্ষককে চাপ প্রয়োগ করেন। প্রধান শিক্ষক অনৈতিক এ দাবি প্রত্যাখান করলে সভাপতি ও কতিপয় সদস্যসহ তার সাথে অত্যন্ত অশোভন আচরণ, গালিগালাজ এবং লাঞ্চিত করেন।

স্থানীয় এবং বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট (মঙ্গলবার) বিদ্যালয়ে সহ-প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সভাপতি তার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে নিজের তৈরি করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিতে চাওয়ায় নিয়োগ বোর্ডের অন্যান্য সদস্য তাতে আপত্তি জানায়। নিজের তৈরি করা প্রশ্নপত্রে পরিক্ষা নিতে না পেরে এবং নিজের পছন্দের প্রার্থীর নিয়োগ হবেনা জেনে সভাপতি নিয়োগ পরীক্ষা না নিয়েই বিদ্যালয় তথা পরিক্ষা কেন্দ্র ত্যাগ করেন। এরই জের ধরে পরের দিন ৭ আগস্ট বুধবার এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।

প্রধান শিক্ষক আজাহারুল ইসলাম বলেন, সভাপতি আবু হাসান বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে অবৈধ ভাবে নিজের তৈরি করা প্রশ্নপত্রে যেন-তেন পরীক্ষা নিয়ে নিজের পছন্দের একজনকে নিয়োগ দিতে চান, যা আমার পক্ষে এবং প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে মেনে নেয়া কোনক্রমেই সম্ভব নয়। আমি তার এই অনৈতিক দাবি না মানায় তিনি আমাকে লাঞ্চিত করেছেন। এর বিচার চেয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে ।

এসএমসি সভাপতি আবু হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিষয়ে কে কি বললো তাতে আমার কিছু যায় আসেনা। অভিযোগকারীকে আমার সামনে নিয়ে আসেন। আমি এখন ব্যস্ত আছি কথা বলতে পারবো না।

সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মকবুল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মুলত বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে এককভাবে সভাপতির পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়াকে কেন্দ্র করে এ দ্বদ্বের শুরু। তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, বিদ্যালয়ের প্যাডে এবং প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের সরকারি মুঠো ফোন বন্ধ থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ মোবারুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, কীর্ত্তিপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমি দ্রুত সরেজমিন তদন্ত পূর্বক বিধিগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।