নওগাঁর মান্দায় সড়কের জমির মাটি কেটে জলাশয়!

নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
সড়কের দুইধারে কোথাও দেখতে পাওয়া না গেলেও নওগাঁ-রাজশাহী অভ্যন্তরীণ মহাসড়কের একটি স্থানে জলাশয় নজড় কাড়বে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের সড়কের ওই স্থানটিতে কোন কিছু পরোয়া না করে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে গভীর করে তৈরী করা হয়েছে জলাশয়। সম্প্রতি নওগাঁ-রাজশাহী অভ্যন্তরীণ মহাসড়কটি প্রশস্থ করা হয়েছে। এখনও স্থানে স্থানে চলছে কাজ। এরইমধ্যে নওগাঁ সড়ক বিভাগের রাজশাহী-নওহাটা-চৌমাসিয়া সড়কের ৫০তম কিলোমিটারে শাপলা ফিলিং ষ্টেশনের পূর্ব পার্শ্বে সরকারী জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন করে দখল করে মাছ চাষ করার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নওগাঁ সড়ক বিভাগের রাজশাহী-নওহাটা-চৌমাসিয়া সড়কের মান্দা উপজেলার অন্তর্গত ৫০তম কিলোমিটারে শাপলা ফিলিং ষ্টেশনের পূর্ব পার্শ্বে সরকারী জমিতে অবৈধভাবে পুকুর খনন করা হয়েছে। খনন করা সেই ক্যানেলটিতে দূর থেকে সেচযন্ত্র দিয়ে পাইপের মাধ্যমে ক্যানেলে পানি দেয়া হচ্ছে। সেখানে মাছ চাষ করা হয়েছে। সড়কের ওই স্থানটিতে পানি যাতে দীর্ঘদিন জমে থাকে সেই কারনে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে গভীর করে সেই মাটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, এলাকার প্রভাবশালীরা এই কাজে যুক্ত থাকায় ভয়ে কেউ মুখ খুলছে না। গত ৩ মার্চ নওগাঁ সড়ক ও জনপদের সড়ক উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এই কাজে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ১৯ জনের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেছেন।

এই নোটিশের বিষয়ে জানার জন্য নোটিশ প্রাপক পরইল গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রুবেলের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়। তিনি নোটিশ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে জানান, সড়কের পাশের ক্যানেলে পানি থাকলে মাছ চাষ করা হয়। এখানেও তাই করা হয়েছে। ক্যানেলের কিছু মাটি কেটে গ্রামের সড়ক মেরামত করা হয়েছে। সেচ যন্ত্রদিয়ে পাইপের মাধ্যমে পানি এনে খাল ভরা হয়নি।
একই গ্রামের মৃত খলিলের ছেলে আছের আলী জানান, তিনি সড়কের ক্যানেলে মাছ চাষের সাথে জড়িত নন। তবে সড়কের ওই জমি থেকে মাটি নিয়ে গ্রামের সড়ক মেরামত করা হয়েছে।

সরেজমিন আরো দেখা যায়, সওজ এর ওই জমির পার্শ্ববর্তী কয়েকজন জমির মালিক সড়কের ওই জমির মাটি দিয়ে তাদের জমি ঠিকঠাক করে নিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে মান্দা উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা খন্দকার মুশফিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সওজ এর নোটিশের একটি অনুলিপি তিনি পেয়েছেন।
সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, আইন ও সংস্থা অধিশাখা এর স্মারক নং-৪১২ তারিখ ০৭/১২/২০১৫ ইং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রাজধানীসহ সকল জেলা সমূহে মহাসড়কের উভয় পার্শ্বে সকল অবৈধ স্থাপনা অপসারনের নির্দেশ প্রদান করেছেন হাইকোর্ট। যানবাহন বিধিমালা ২০০১ এর ৮ বিধি অনুসারে মহসড়কের উভয় পার্শ্বে ১০ মিটারের মধ্যে কোন স্থাপনা নির্মাণ অথবা নির্মাণের নিমিত্তে অনুমোদন দেয়া যাবে না। আরো জানা যায়, হাইওয়েজ (সংশোধনী) এ্যাক্ট-৬/১৯৯৪ (সেকশন-৫,বেঙ্গল এ্যাক্ট-(৩)/১৯২৫ এর সংশোধনী) মোতাবেক যে কোন অবৈধ কাজ করলে অথবা দখলদারকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ ৬ মাসের জেলের বিধান রয়েছে।

নওগাঁ সড়ক ও জনপদের সড়ক উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ জানান, অভিযুক্তদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

স/শা