নওগাঁয় বেড়েছে পেঁয়াজ-আলুর দাম

নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁয় সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজ ও আলুর দাম বেড়েছে। বাড়তি দামে এসব কিনতে হিমসিম খেতে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের। তবে বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমেছে দাম। পেয়াজ ও আলুর দাম উর্ধ্বগতির কারণে নাভিশ্বাস ঠেকলেও সবজিতে রয়েছে স্বস্থি। ব্যবসায়িদের দাবি, সর্বশেষ বৃষ্টিতে আলু ও পেঁয়াজ রোপনে কিছুটাবিলম্ব হয়েছে। এ কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় আলু ও পেঁয়াজের বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নওগাঁ পৌর পাইকারি বাজারে- সপ্তাহের ব্যবধানে পেয়াজ কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি দেশি পেয়াজ ১২০-১২৫ টাকা ও আমদানিকৃত পেয়াজ ১০০ টাকা। ৫-৭ টাকা বেড়ে দেশি আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭০ টাকা এবং হলেন্ডার আলু ৫৫-৫৬ টাকা। প্রকারভেদে প্রতিকেজি সবজিতে ১০-১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে- পেঁপে ২৫ টাকা, শষা ৩০ টাকা, বরবটি ৩৫ টাকা, মুলা ৩৫ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, পটল ৪৫ টাকা, করলা ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, মুলা শাক ৪০ টাকা, লাল শাক ৬০ টাকা, পালং ১০০ টাক, কাঁচা মরিচ ৯০ টাকা কেজি এবং লাউ প্রতিপিস ৩০ টাকা। পাইকারি বাজার সকাল থেকে চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এসময়ের মধ্যে একজন ক্রেতা সর্বনি¤œ ৫ কেজি কিনতে হবে। তবে এ সময়ের পর এক কেজি করে কিনতে পারবেন। প্রতিদিন এ বাজার থেকে প্রায় ২৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ও প্রায় ২৫০ মণের মতো আলু বিক্রি হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- গত বছর জেলায় ১৯ হাজার ২৮৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছিল। যা থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭৯৩ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছিল। চলতি বছরে জেলায় ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হবে। যা থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ২১৫ মেট্রিক টন। গত বছর ৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমি থেকে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল ৫৭ হাজার ২৫৭ মেট্রিক টন। এ বছরে পেঁয়াজের আবাদ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৮৯০ হেক্টর। যা থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৩ হাজার ৫৯০ মেট্রিক টন। এছাড়া গত বছর ৮২০ হেক্টর জমি থেকে রসুনের উৎপাদন হয়েছিল ৭ হাজার ৬২৬ মেট্রিক টন। এ বছর রসুনের আবাদের পরিমাণ ৭৮০ হেক্টর ধরা হয়েছে। যা থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ২০ মেট্রিক টন।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে অতিবৃষ্টি হয়। এ কারণে আগাম জাতের আলু ও পেয়াজ রোপনে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় বাজারে আসতে দেরি হচ্ছে। এছাড়া মৌসুমে শেষ সময় আলু ও পেঁয়াজ রোপন করা হচ্ছে। এ কারণে বেড়েছে এ দুই পণ্যের দাম। গত বছর চাষিরা আলুর আবাদ কমিয়ে সরিষার আবাদ করেছিল। আলুর আবাদ কম হওয়ায় এবার দাম বেশি হয়েছে।

ক্রেতা রেজাউল করিম বলেন- প্রতিদিনই বাড়ছে কোন না কোন পন্যের দাম। একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। বাড়তি দামে আলু ও পেঁয়াজ কিনতে সাধারণ ক্রেতাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। এতে করে নাভিশ্বাস ঠেকছে। বাজার নিয়ন্ত্রনে নিয়মিত মনিটরিংয়ের দাবী জানানো হয়েছে।

সবজি ব্যবসায়ি রাজু আহমেদ বলেন- বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কেজিতে ১০-১৫ টাকা কমে সবধরণের সবজি ৩০-৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আগামীতে আরো দাম কমলে ক্রেতারাও কিনে স্বস্থিত পাবে।

আলু ব্যবসায়ি আবু হাসেম বলেন- বৃষ্টির কারণে নতুন পাতা পেঁয়াজ ও আলু বাজারে আসতে দেরি হচ্ছে। দেশি আলু ৬৮-৭০ টাকা ও হলেন্ডার আলু ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দাম বেড়ে দেশি পেয়াজ কেজিতে ১২০-১২৫ টাকা ও আমদানিকৃত পেয়াজ ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আমদানিকৃত পেয়াজের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে দেশি পেঁয়াজের দাম সেভাবে বাড়েনি।

নওগাঁ কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো: আমিনুল ইসলাম বলেন- গত বছর আলু ও পেঁয়াজের উৎপাদন কম হয়। এ কারণে মৌসুমের শেষ সময় এসে দাম  বেড়েছে। তবে চাষাবাদ বাড়াতে কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রনে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।