সোমবার , ১০ জুন ২০২৪ | ১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

বেড়েছে বাহারি মাছচাষ, বৃহৎ বাণিজ্যের স্বপ্ন নওগাঁর চাষিদের

Paris
জুন ১০, ২০২৪ ৬:৪২ অপরাহ্ণ

লোকমান আলী, নওগাঁ :

নওগাঁয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পুকুরে বাণিজ্যিক অর্নামেন্টাল ফিশ/বাহারি মাছ চাষ। শিক্ষিত বেকার যুবকরা বাহারি মাছ চাষের দিকে এগিয়ে আসায় কমছে বেকারত্বের হারও। তবে মাছগুলো পরিবহনে বিশেষায়িত কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়তই সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে খামারিদের। আগামীর সম্ভাবনাময় দামি এই মাছচাষের দিকে সরকারের সুদৃষ্টি চেয়েছেন খামারিরা।

জানা গেছে, বাসা কিংবা বড় বড় হোটেল এমনকি অফিসের অ্যাকুরিয়ামে শোভা পায় হরেক রকমের বাহারি মাছ। বর্তমানে সৌখিন মানুষদের শখের অন্যতম স্থান দখল করে নিয়েছে এই অর্নামেন্টাল ফিশ। নওগাঁয় দিন দিন এই মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলার সদর, আত্রাই, বদলগাছী, পত্নীতলা, ধামইরহাটসহ বিভিন্ন উপজেলায় সাধারণ মাছের সঙ্গে পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বাহারি মাছ। স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী পিকেএসএফের অর্থায়নে সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মৎস্য খাতের আওতায় ২২-২৩ অর্থ বছরে “অর্নামেন্টাল বা বাহারি মাছ চাষ” প্রদর্শনীর মাধ্যমে উৎসাহী চাষিদের দিয়ে বাহারি মাছ চাষ শুরু করেছে।

জেলার বদলগাছী উপজেলার কামারবাড়ি গ্রামের বাহারি মাছচাষি আবু রায়হান সিদ্দিক বলেন, মৌসুমীর সার্বিক সহযোগিতায় ৫টি পুকুরে বাহারি মাছচাষ করেছেন। তিনি সিল্কি কই কার্প ও কমেট মাছের রেণু সফলভাবে উৎপাদন করেছেন। বর্তমানে তার পুকুরে বাহারি কই কার্প, কমেট, বাটার ফ্লাই, অরেন্টা ফিশ, মলি ও গাপ্পি মাছ চাষ হচ্ছে।

প্রতিটি মাছ পিচ হিসেবে বিক্রি হওয়ায় বাজারে দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে তিনি যেমন লাভবান হচ্ছেন তার দেখাদেখি অনেক উদ্যোক্তারাও বাহারি মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। বিশেষ করে শিক্ষিত বেকার যুবকরা এই বাহারি মাছ করে ভাগ্যের বদল করতে পারেন বলে জানান রায়হান।

একই উপজেলার আরেক মাছচাষী দেবনাথ চৌধুরী জানান তিনি রায়হানের কাছ থেকে রঙিন মাছ নিয়ে চাষ করেছেন। মাছগুলো দেখতে যেমন সুন্দর তেমনভাবে অনেক বড় হয়। বাজারে গিয়ে এই মাছ বিক্রির কোনো ঝামেলা হয় না। রঙিন মাছ দেখে ক্রেতারা সহজেই ক্রয় করেন। অনেক মানুষই এই রঙিন মাছচাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

নওগাঁ শহরের বাসিন্দা আব্দুর রউফ পাভেল বলেন, বাসার অ্যাকুয়ামের জন্য রঙিন মাছ কিনতে আর ঢাকা কিংবা অন্য কোথাও যেতে হয় না। খুব সহজেই নওগাঁ থেকে মাছ সংগ্রহ করা যাচ্ছে। নওগাঁয় পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে রঙিন মাছচাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে সরকারিভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারলে রঙিন মাছ চাষই শিক্ষিত বেকার যুবকদের ভাগ্য বদলের দ্বার হিসেবে কাজ করবে।

মৌসুমীর মৎস্য কর্মকর্তা শাহারিয়া হোসেন বলেন, মৌসুমী সব সময় নওগাঁর মানুষদের অধিক লাভজনক নতুন নতুন ফসল চাষ করা থেকে শুরু করে কৃষি বিভাগের সকল খাতেই সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক পর্যায়ে মাছচাষি রায়হানকে মৌসুমীর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে রঙিন মাছ চাষ শুরু করেছি। ফলাফল ভালো হলে নওগাঁর আগ্রহী উদ্যোক্তাদের বড় পরিসরে এই রঙিন মাছ চাষে সার্বিক সহযোগিতার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. বায়েজিদ আলম বলেন, স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থার পাশাপাশি সরকারিভাবেও জেলার কয়েকটি উপজেলায় আগ্রহী মাছচাষিদের মাধ্যমে রঙিন মাছ শুরু করা হয়েছে। তবে এই মাছচাষ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুব সহজেই নিরাপদে চালান করার মতো বিশেষায়িত পরিবহন ব্যবস্থা এখনও গড়ে না ওঠার কারণে মাছচাষ বিস্তার করতে পারছে না।
রঙিন মাছ সাধারণ মাছের মতো নয় তাই এই মাছের ক্রেতা সারা দেশেই রয়েছেন। এই রঙিন মাছ চালানের জন্য বিশেষায়িত পরিবহন ব্যবস্থা সৃষ্টি করা গেলে আরো খুব দ্রুতই নওগাঁসহ দেশব্যাপী এই রঙিন মাছ চাষের মাধ্যমে নতুন এক সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হতো বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা।

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর