নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
নওগাঁ সদর হাসপাতালে মৌসুমী আকতার নামে এক গৃহবধূ ছয় মৃত সন্তান প্রসব করেছেন। গর্ভবতী হওয়ার ৪ মাসের মধ্যেই এই প্রসবের ঘটনাটি ঘটে।
শুক্রবার রাতে নিজ বাড়িতে একটি ও শনিবার সকাল ১০টার দিকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে পর পর ৫টি মৃত সন্তান প্রসব করে মৌসুমী আকতার। নওগাঁয় কোনো গৃহবধূর একসঙ্গে ৬টি মৃত বাচ্চা প্রসবের ঘটনার এটাই প্রথম। এই আলোড়ন সৃষ্টিকারী প্রসবের ঘটনা দেখতে নওগাঁ সদর হাসপাতালে শত শত উৎসুক নারী-পুরুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রওশন আরা খানম জানান, গর্ভবতী হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা প্রসব হতে ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহ সময় লাগে। কিন্তু এই প্রসূতির ক্ষেত্রে স্পন্টানিয়াস এ্যাবরশান (আপনা-আপনি গর্ভপাত) হয়েছে। যার কারণে মাত্র ১৬ সপ্তাহে ৬টি মৃত সন্তান প্রসব করেছে। মৃত বাচ্চাগুলো ছেলে ছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
মৌসুমী আকতারের স্বামী শেখ রানা জানান, ২০১০ সালে নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভরোট্র কাঠেরডাঙ্গা গ্রামের ফজের আলীর মেয়ে মৌসুমীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে তাদের কোনো সন্তান হয়নি।
গত এপ্রিল মাসে তার স্ত্রীর পেটে সন্তান আসে। স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শে নওগাঁ একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসোনোগ্রাম করার পর জানতে পারেন তার স্ত্রীর পেটে ৬টি সন্তান রয়েছে।
এরপর থেকে গাইনী ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হঠাৎ করে শুক্রবার বিকেলে তার স্ত্রী মৌসুমী আকতার অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে নওগাঁ শহরের খাস নওগাঁয় মৌসুমীর স্বামী শেখ রানার বাসায় একটি মৃত সন্তান প্রসব করে। এ সময় মৌসুমী আকতারের অবস্থার অবনতি হলে তাকে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার সকাল ১০টার দিকে আরো ৫টি মৃত সন্তান প্রসব করেন। তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রওশন আরা খানম আরো জানান, বর্তমানে প্রসূতি মৌসুমী আকতার সুস্থ আছে। একের অধিক বাচ্চা গর্ভে থাকলে প্রসূতিকে স্পেশাল কেয়ার নিতে হয়। আর মৌসুমীর ক্ষেত্রে ৬টি বাচ্চা গর্ভে থাকায় অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ ছিলেন তিনি। শুক্রবার রাতে তার স্বাভাবিক প্রসব ব্যাথা উঠে এবং একটি মৃত বাচ্চা প্রসব করে। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকাল ১০টার দিকে ৫টি মৃত বাচ্চা প্রসব করে মৌসুমী আকতার।
