সোমবার , ৩ জুন ২০২৪ | ১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ ও দুর্নীতি
  3. অর্থ ও বাণিজ্য
  4. আইন আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. কৃষি
  7. খেলা
  8. চাকরি
  9. ছবিঘর
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দুর্ঘটনা
  13. ধর্ম
  14. নারী
  15. নির্বাচিত খবর

ধুনট উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ত্রিমুখী লড়াই, সংঘাতের শঙ্কা

Paris
জুন ৩, ২০২৪ ১২:০৫ অপরাহ্ণ

দীপক কুমার সরকার, বগুড়া:
৫ জুন বুধবার দেশের ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৪র্থ ধাপ। সে অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বগুড়ার তিন উপজেলা শেরপুর, ধুনট ও নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। তবে এই নির্বাচনে বিএনপি বা তাদের সমমনা দল অংশগ্রহণ করেনি। তাছাড়া কৌশলে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন বা প্রতিক বরাদ্দ দেয়নি। তাইতো জনমতের সমর্থনের ভিত্তিতেই সরকারি দলের বিভিন্ন স্তরের ত্যাগী নেতারা নির্বাচনী যুদ্ধে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষণা অনুযায়ী স্থানীয় সাংসদ প্রতিদ্বন্দ্বি কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারবেনা। এমননি দলীয় প্রভাব বিস্তারে উপজেলার পর্যায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বা প্রভাবশালী নেতারা কোন নির্বাচনী সভা- বৈঠক করে ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারবেনা। এমন ঘোষণা থাকলেও বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিত্র ভিন্ন। এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভ্যন্তরীন কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এসেছে। মৌনযুদ্ধে চলছে বর্তমান সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও টানা তিন বারের সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবর রহমান গ্রুপের অস্তিত্ব টিকে রাখার প্রতিযোগীতা।

এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষের সমর্থনকারীদের সাথে বাধছে বাকবিতণ্ডাসহ মারপিট হুমকী-ধামকীর ঘটনা। নিজেদের পক্ষে জয় ফসল নিতে ভোটকেন্দ্র দখলের আশঙ্কা বিরাজও করছে। নির্বাচনী প্রচারনায় শেষ মূর্হুতেও উৎতপ্ত হচ্ছে ভোটের মাঠ।

এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৩জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান টিআইএম নুরুন্নবী তারিক (ঘোড়া), সহ-সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হাই খোকন(মোটরসাইকেল) ও সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল সনি (আনারস)। তিনি সদস্য বিদায়ী স্থানীয় সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ হাবিবর রহমানের পুত্র। প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বনের কমতি রাখছে না।

তবে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের ভোট প্রার্থনার কৌশল ও উন্নয়ন প্রতিশ্রুতিতে ভোটাররা অনেকটা বেকায়দায় পড়েছেন। কোন প্রার্থী এলাকার কাঙ্খিত উন্নয়ন ঘটাতে পারবে এমন চিন্তা-ভাবনা শেষ করতে পারছে না। হেভিওয়েট ৩ প্রার্থী ভোটের মাঠে সমানতালে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। চেয়ারম্যান পদে অংশ নেওয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরোধ এখন তুঙ্গে। দলীয় কোন্দল, পদপদবি, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা কারণে বিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগ। তাই প্রার্থীরা একে অপরকে ছাড় দিতে নারাজ। দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী সভায় এক অপরকে বিষোদগার করে যাচ্ছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) ও নির্বাচনী সভায় কথার তুমুল লড়াই চলছে দুই প্রার্থীর নেতা-কর্মীদের মধ্যেও তবে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির প্রচার প্রচারণায় কোন বিরোধের আবাস পাওয়া যায়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ভোটার তাদের যুক্তি তর্ক দিয়ে বলেন এবার নির্বাচনে ত্রিমুখী লড়াই হবে এই উপজেলায়।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো উপজেলা। তবে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে তেমন কোনো মাতামাতি নেই। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ব্যাপারেও মুখ খুলছেন না অনেকেই। কয়েকজন বলেন, সামনের কয়েক দিনে প্রার্থীরা ভোটারদের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত ভোট উৎসবের আমেজ ফেরাতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে তাদের।

তবে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে প্রতিদিনই মোটরসাইকেল মহড়া ও মিছিল বের করছেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, দলের কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের মাঠ উন্মুক্ত করা হয়েছে। এবার নেই দলীয় প্রতীকও। একাধিক শক্ত প্রার্থী থাকায় প্রতিদিনই চলছে নির্বাচনী মতবিনিময়, পথসভা ও প্রচার-প্রচারণা। ভোটারদের সমর্থন পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রার্থীরা। আর প্রার্থীদের পক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তাদের কর্মী-সমর্থকেরা। বিজয় সুনিশ্চিত করতে কেউ কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলছেন না।

উপজেলার গোপালনগর ইউনিয়নের ভোটার তারাপদ হালদার বলেন, এ নির্বাচনে তিনজনই শক্তিশালী প্রার্থী। কারো অবস্থান কম এমনতো শুনছি না। তবে এবার ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা ব্যাপক। শান্তিপূর্ণ ভোটের আশা করছি। ভোট কাকে দিবো এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি।

ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সজাগ রয়েছি। দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে অপ্রীতিকর কিছু ঘটনা ঘটেছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট উপহার দিতে প্রশাসন সার্বক্ষণিক কাজ করছে। আশা করি ভোটের দিনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকবে।

সংশ্লিষ্ট ধুনট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরুল আমীন বলেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর কোনো সুযোগ থাকবে না। ভোট কাটা বা কেন্দ্র দখলের ঘটনা যেন না হয় সেজন্য প্রশাসন বেশ তৎপর রয়েছে।

এ উপজেলায় ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৯০টি। ভোট কক্ষ ৬৮৭টি। এরমধ্যে অস্থায়ী ভোট কক্ষ ৬৬টি। মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩২৪জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৩৪ জন এবং মাহিলা ভোটার ১ লাখ ২৮ হাজার ৬৮৭ জন।

সর্বশেষ - রাজশাহীর খবর