ধুনটে লকডাউনে লোকসান গুনছেন বাদাম চাষীরা

ধু-ধু বালুচর। চিক চিক কণার বুকে লতানো সবুজ গাছ। গাছের মুঠি ধরে টান দিলেই ওঠে আসে থোকা থোকা বাদাম। চরের বালুর নিচেই ফলে বাদাম। যার রং সোনালি। যেন বালুর নীচে লুকানো মুঠো ভরা সোনা। অক্লান্ত পরিশ্রমে ফলানো এই ফসল। প্রতিবছর ফসলের সোনালী হাসি ছড়িয়ে পড়েছে কুষকের মুখে। কিন্ত করোনার প্রভাবে এবার কৃষকের সেই হাসি ম্লান হয়ে গেছে।

সরেজমিন বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর চরের বাদাম চাষীদের সাথে কথা বলে এমন সব তথ্য পাওয়া গেছে। লাভের আশায় বাদাম চাষের পিছনে খরচ করে তারা এবার লোকসানের মুখে পড়েছেন।

জানা গেছে, যমুনা নদীর চরে কয়েক বছর ধরে বাদাম চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়ে আসছিলেন চাষিরা। তারা তুলনামূলক অন্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভবান হয়েছিলেন। এ বছরও লাভের আশায় বেশি জমিতে বাদাম চাষ করে বিপদে পড়েছেন। করোনার প্রভাব পড়েছে বাদাম ক্ষেতে। জমি থেকে বাদাম তুলে বাজারজাত করার মোক্ষম সময় এখন। কিন্তু লকডাউনের কারণে পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় বাজারজাত করতে না পারা ও পাইকার কিনতে না আসায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

ভান্ডারবাড়ি গ্রামের চাঁন মিয়া জানান, নতুন জেগে ওঠা চরের উপরিভাগে অধিক পরিমাণ বালু থাকায় সেসব জমিতে অন্য কোনো ফসল হয় না। এ কারণে মৌসুমের শুরুতে সেসব জমিতে বাদাম রোপণ করা হয়। কাঁচা বাদাম কেনার পর তার ছাল ছড়িয়ে ভেতরের কোয়া (বীজ) রোপণ করা হয়। প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম চাষে তাঁর খরচ হয় সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। আর সেখানে ফলন পাওয়া যায় ৫ থেকে ৭ মণ।

কৈয়াগাড়ি গ্রামের আব্দুল বারিক বলেন, চরের জমি থেকে বাদাম তোলা শুরু করেছি। এর মধ্যেই লকডাউন। ফলে বাজারে নিতে পারছি না। পাইকারদের কাছেও বিক্রি করতে পারছি না। করোনার আগে ৩ হাজার টাকা মণ বিক্রি করা গেছে। সেই বাদাম এখন দেড় হাজার টাকা মণ। তারপরও বাদাম কেনার পাইকার নেই।

ধুনট উপজেলা উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান বলেন, যমুনা নদীর চরে এবার ২০০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাদামের দানাও পরিপুষ্ট হয়েছে। এছাড়া বাদাম গাছে কোন রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ ছিল না। কিন্ত পরিবহন ব্যবস্থা না থাকায় বাদাম বাজারজাত করতে না পারায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন চাষিরা।

 

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ