ধাপ ফেলার জায়গা নেই নগরীর বিপনী বিতান গুলোতে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কাল চাঁদ দেখা গেলে পরশু ঈদ। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে আর প্রিয়জনদের মুখে হাসি ফোটাতে নগরীর বাজার গুলোতে শুরু থেকেই ক্রেতাদের আগমন ছিল চোখে পড়ার মতো। দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে চাপটা ক্রমেই বাড়তে থাকে। তবে শেষ সময়ের কেনাকাটায় অনেকটাই ব্যস্ত হয়ে উঠেছে নগরবাসি। আর তাদের সাথে তাল মেলাতে গিয়ে দম ফেলার সুযোগ পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। শেষ মুহুর্তের টুকিটাকি কেনাকাটাও চলছে দেদারসে। শনিবার সকালে নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা মেলে এসব চিত্র।

 

রমজানের শুরুতে ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা শুরু হয়েছিল বেশ জড়ালো ভাবেই। বাজারে ক্রেতার চাপ যেমন ছিল তেমনি দোকানীরাও ছিল প্রস্তত। ঈদে মূলত বিক্রেতাদের মূল আকর্ষণ হয়ে থাকে তরুন ও যুবক ক্রেতারা। এবারে রমজানের শুরুর দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি দিয়ে দেয়ায় এসব ক্রেতাদের চাপ বাড়তে থাকে বাজারে। ১০ রমজান থেকে ১৫ রমজান চলে রাজশাহীতে অবস্থানরত বিভিন্ন জেলা উপজেলার তরুন ক্রেতাদের কেনাকাটা। দর্জি পাড়ায় জমতে থাকে তরুনীদের নতুন জামা তৈরীর অর্ডার। ফলে দেখা যায় ২০ রমজানের পর ব্যস্ত নগরী রাজশাহী ফাকা হতে থাকে।

 

স্থানীয় ক্রেতারা মূলত ১৫ রমজানের পর থেকে বাজার শুরু করেন। এবারো তার ব্যতিক্রম হয়নি। বাজারে শেষ মুহুর্তের কেনাকাটায় পুরোদমে হুমড়ে পড়েছেন নগরবাসি। আর দোকানীরা তাদের ইফতারে সময়টুকু শুধু পাচ্ছেন। ক্রেতা পর্যাপ্ত থাকায় অনেককে দোকানেই সেহেরী করতে হচ্ছে। ক্রেতাদের চাপ সামলাতে আর দোকানের মালামাল সামাল দিতে বিপনী বিতানগুলোতে অতিরিক্ত কর্মচারী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

 


সরেজমিনে রাজশাহীর বাজার গুলোতে গিয়ে দেখা যায় শেষ সময়ে ছেলেদের পাঞ্জাবি, পায়জামা, প্যান্ট, মেয়েদের থ্রি পিস, জুয়েলারী আর কসমেটিকস সামগ্রীর দোকানগুলোতে উপচে পড়া ভীড়। দুপুর এবং সন্ধ্যার পর পা রাখার জায়গা থাকেনা এসব দোকানগুলোতে। সাহেব বাজার আরডি এ মার্কেটের অপরুপা জুয়েলার্স এর প্রোপাইটর সিদ্দিকুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, মেয়েদের কেনাকাটার সবার শেষে আসে জুয়েলারী সামগ্রী। প্রথম দিকে তেমন ক্রেতা সমাগম ছিল না। শেষ দিকে এসে ক্রেতাদের চাপ সামলানো যাচ্ছে না।

 

তন্বী ফ্যাসানের মালিক তৌহিদুজ্জামন বলেন, ক্রেতা ভালোই আসছেন। গতবারের চেয়ে এবারে ব্যবসা তেমন ভালো না হলেও শেষ সময়ে বেচাকেনা হচ্ছে। জেন্টস আইটেমগুলো দেরীতে বিক্রি হওয়ার কারন হলো, রাজশাহীর অনেকেই পড়াশোনা বা কাজের জন্য ঢাকায় থাকেন। তারা মূলত সেখান থেকেই বাজার করে আসেন। অতিরিক্ত কিছু নিতে বা যারা এখনো কিছু কিনেন নি তারা এই সময়ে বেশি আসে। তাই আমাদেরও একসাথে চাপ পড়ে।

 

কসমেটিকস ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, শেষের দিকে ছেলে মেয়ে উভয়েই কসমেটিক সামগ্রীগুলো কিনে নিয়ে যায়। চাঁদ রাত পর্যন্ত এ চাপটা থেকে যায়। এখন বেচা কেনা ভালো চলছে। বিদেশী এবং ব্রান্ডের পণ্যের প্রতি সব ধরণের ক্রেতাদের বেশ চাহিদার কথা জানান তিনি।

এদিকে ঈদের দিনের বিশেষ খাবারের আয়োজন করতে বেচাকেনা বেড়েছে মুদি দোকানগুলোতে। জমে উঠেছে সেমাই,চিনি, পোলাও চাল, ঘি, আর মসলার বাজার গুলোও। ঈদে আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিদের আপ্যায়নে আর সুস্বাদু রসনা তৈরিতে মুদিদোকানগুলো এখন জমজমাট। সেই সাথে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজারেও বেড়েছে ভীড়। খুচরা ও পাইকারী এসব মুদি দোকানগুলোতে শেষ সময়ে বিপুল ক্রোতার সমাগম হচ্ছে। তবে এসব ক্রেতা বেশির ভাগই আসেন সকালে।

 

মুদি ব্যবাসায়ী আলতাফ বলেন, নিত্যদিনের চেয়ে ঈদের কেনাকাটা অবশ্যই বেশি। সে তুলনায় বলা যায় বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। এখন দেশী লাচ্চা সেমাই, চিনি, তেল, দুধ আর পোলাও চাল, আতপ চাল বিক্রি তুলনামুলক বেশি হচ্ছে।

 

আসছে ঈদ, বাড়ছে ক্রেতাদের পণ্য কেনার চাহিদা। সব কেনা শেষ তাও কি যেন নেই ভেবে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো সংগ্রহ করতে স্ববান্ধবে কিংবা স্বপরিবারে ছুটে যাচ্ছেন বাজারগুলোতে। তীব্র গরম উপেক্ষা করেও বাজারুগুলোতে এখন পা দেয়ার ঠাই নেই। তবুও ঈদ বলে কথা। শেষ সময়ে একটি পছন্দও যেন বাদ না পড়ে তাই সেটি সংগ্রহে বাজারমুখী হচ্ছেন্ বিভিন্ন বয়সের ক্রেতারা।

স/শ