ধর্ষকের সামনে ‘ধর্ষণ হওয়ার গল্প’ শোনালেন ধর্ষিতা!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

ধর্ষণের মামলা হওয়ার দীর্ঘ এক মাসেও পুলিশ ধর্ষককে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও র‌্যাবের হাতে ঠিকই ধরা পড়ল ধর্ষক। থানায় হস্তান্তরের পর ওই রাতেই পুলিশ ধর্ষিতাকে ডেকে এনে অভিযুক্তকে শনাক্ত করলেও থানায় ভেতরের একটি কক্ষেই ধর্ষকের উপস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের সামনে বলতে হয়েছে আগে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের বর্ণনা। এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল থানায়। শনিবার কিশোরীর কাছ থেকে ঘটনা জানা যায়।

প্রতিবেশী সম্পর্কে চাচাতো ভাই কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্যত্র বিয়ে হয়েছিল ওই কিশোরীর। কিন্তু ক্ষিপ্ত ধর্ষক এই বিয়ে মানতে না পেরে বরকে বলে দেয় সে নববধুকে ধর্ষণ করেছে। এ অবস্থায় চার দিনের মধ্যেই তালাকপ্রাপ্ত হয় নববধূ। ওই ধর্ষিতার বাড়ি নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে। গত ১৬ অক্টোবর নান্দাইল থানায় মামলা হলেও পুলিশ আসামি ধরতে পারছিল না। এর মধ্যে স্পর্শকাতর এ মামলাটি ছায়া তদন্তে নেমে র‌্যাব-১৪ এর একটি দল গত ১১ নভেম্বর চট্রগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে ধর্ষক বকুল মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পরদিন রাতে নান্দাইল থানায় হস্তান্তর করে।

ধর্ষণের শিকার কিশোরী জানায়, সে লোকলজ্জার ভয়ে নিজের বাড়ি ছেড়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তার বাবা এসে থানায় যাওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। পরে রাতে থানায় অবস্থান করলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম অভিযুক্ত বকুল মিয়াকে তার সামনে এনে হাজির করে শনাক্ত করতে বলেন। এটাই ধর্ষক বকুল মিয়া নিশ্চিত করে সে। পরে এসআই মনিরুল তাদের সামনেই অভিযুক্তকে লাঠিপেটা করে ধর্ষকের সামনেই তার মামার উপস্থিতিতে ধর্ষণের ঘটনা বর্ণনা করতে বলেন। একরকম বাধ্য হয়েই সে দিনের ঘটনার কথা বলতে হয়েছে তাকে।

কিশোরী বলে, ‘যে আমার সর্বনাশ করল তার সামনে আবার ঘটনা কওন লাগছে, এতে আমার খুবই খারাপ লাগছে’।

ধর্ষণের শিকার কিশোরী আরো জানায়, সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। এ অবস্থায় পাশের আব্দুল্লাহপুর গ্রামের মো. ফজলুল হক ফজলুর ছেলে মো. বকুল মিয়ার বিয়ের প্রলোভনে তাকে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় বকুল। পরে ঘটনা চেপে যায় কিন্তু শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকে। এর মধ্যেই পরিবারের লোকজন তাকে বিয়ে দেয় পাশের গ্রামের এক যুবকের সাথে। কিন্তু তার বিয়ে হয়ে যাওয়ার ঘটনা কোনোভাবেই মানতে পারছিল না বকুল মিয়া। একপর্যায়ে বরকে বলে দেয় সে আমাকে ধর্ষণ করেছে। এই অবস্থায় বিয়ের চার দিনের মধ্যেই সে তালাকপ্রাপ্ত হন। পরে পরিবারের সিদ্ধান্তে আত্মস্বীকৃত ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ওই কিশোরী।

থানায় এসে ধর্ষকের সামনেই ধর্ষিতাকে হাজির করে ধর্ষণের ঘটনা বর্ণনা দেওয়ার ব্যাপারে নান্দাইল থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনি আসামিকে শনাক্ত করতেই মেয়েটিকে থানায় এনেছিলেন। তখন ঘটনাক্রমে কিছু কথা হয়। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়।

 

সূত্র: কালেরকন্ঠ