ধর্ষককে বাঁচাতে গুজরাট নারী পুলিশ অফিসারের কাণ্ড

জোড়া ধর্ষণ মামলার আসামিকে গ্রেফতার না করার বিনিময়ে মোটা টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভারতের গুজরাটের এক নারী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম শ্বেতা জাদেজা। তিনি আহমেদাবাদের মহিলা থানার ইনচার্জ।

এ ঘটনায় শ্বেতা জাদেজার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। যে কোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে জানিয়েছে এই সময়।

ভারতীয় এ সংবাদমাধ্যম জানায়, জিএপি কর্প সায়েন্স নামে একটি বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর কেনাল শাহের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মহিলা থানায় ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই সংস্থারই দুই নারী কর্মী।

গত মাসে এ ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী তথা ওই সংস্থার সিকিউরিটি অফিসার কেনাল শাহের বিরুদ্ধে স্যাটেলাইট থানায় হুমকি দেয়ার পৃথক একটি অভিযোগ দায়ের করেন।।

এই দুটি ধর্ষণের অভিযোগের মধ্যে একটির তদন্তের দায়িত্ব পান এসআই শ্বেতা জাদেজা।

অভিযোগ উঠেছে, ধর্ষণ ও হুমকির দায়ে অভিযুক্ত কেনাল শাহকে গ্রেফতার না করার বিনিময়ে ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ চান তদন্তকারী ওই নারী পুলিশ অফিসার।

শুধু তাই নয়, দাবি মতো টাকা না দিলে দুই নারী সহকর্মীকে ধর্ষণ এবং নিরাপত্তা অফিসারকে হুমকি দেয়ার অভিযোগে ‘সামাজিকবিরোধী কার্যকলাপ প্রতিরোধ’ (পিএএসএ) আইনের আওতায় মামলা করার হুমকি দেন তিনি।

পিএএসএ অ্যাক্ট হলো- কোনো ব্যক্তিকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার জন্য পুলিশকে আটক ও কারাগারে প্রেরণের ক্ষমতা প্রদান।

সম্প্রতি ওই নারী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দাখিল করা ক্রাইম ব্রাঞ্চের এফআইআরে এমনই অভিযোগ আনা হয়েছে।

জানা গেছে, মাত্র ৪ বছর আগে পুলিশে যোগ দেন শ্বেতা জাদেজা। অভিযুক্ত কেনাল শাহের ভাই ভবেশ শাহকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন শ্বেতা জাদেজা। অভিযুক্তের দাদাকে তিনি বলেন, ২৫ লাখ টাকা না দিলে কেনালকে পিএএসএ-তে গ্রেফতার করা হবে।

শেষ পর্যন্ত ২০ লাখ টাকায় রফা চূড়ান্ত হয়। এক পরিচিত ব্যক্তির কাছে ঘুষের টাকা পৌঁছে দিতে হবে বলে অভিযুক্তের ভাইকে জানান ওই নারী পুলিশ অফিসার। কথা মতো কেনাল শাহর ভাই ওই টাকা শ্বেতার বলে দেয়া ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন।

কয়েক দিন পরে কেনাল শাহর দাদাকে ফের থানায় ডেকে পাঠান এসআই শ্বেতা। এবার স্যাটেলাইট থানায় কেনাল শাহর বিরুদ্ধে দায়ের অপর একটি হুমকির মামলায় গ্রেফতারি এড়াতে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। এটাতেও সাড়ে ১১ লাখ টাকায় রফা হয়। আগের মতোই একই অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছে যায়।

এ ঘটনায় গত মাসে ওই নারী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কেনাল শাহের ভাই ভবেশ শাহ। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় শ্বেতা জাদেজার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ঘুষ নেয়ার দায়ে তাকে গ্রেফতার করার প্রস্তুতি চলছে।

 

সুত্রঃ যুগান্তর