দেশে বীজের হালনাগাদ তথ্যভাণ্ডার করবে সরকার এস এম আববাস

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: বিভিন্ন ফসলের বীজের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হালনাগাদ একটি তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বীজ উৎপাদন ও সরবরাহে সমন্বিত তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে তথ্যভাণ্ডার থেকে হালনাগাদ একটি ডাটাবেইস তৈরি করবে কৃষি মন্ত্রণালয়। সরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে দুই উৎস থেকে বীজ সংগ্রহ করা হয়। একটি ফরমাল আর অন্যটি ইনফরমাল। ফরমাল উৎস থেকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি), বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিও’র কাছ থেকে কৃষকরা বীজ সংগ্রহ করেন। বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি বীজের মাঠমান ও বীজমান অনুযায়ী জাতীয় বীজ বোর্ড নির্ধারিত মান প্রদান করে।

সংগ্রহ করা এই বীজের প্যাকেটে বা বস্তায় প্রত্যয়ন ট্যাগ লাগানো থাকে। ইনফরমাল উৎসে কৃষক পর্যায়ে উৎপাদিত বীজ ব্যবহার করা হয়। এই বীজের মান অজানা থাকে এবং সরবরাহ করা বীজের বস্তা বা প্যাকেটে কোনও প্রত্যয়ন লেবেল বা ট্যাগ থাকে না। তাই জাতীয় স্বার্থে একটি নির্ভুল ও হালনাগাদ বীজের তথ্যভাণ্ডার প্রস্তুত প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।

তথ্য সংগ্রহ করা হলে বিভিন্ন ফসলের আওতায় জমির পরিমাণ, চাষী পর্যায়ে কী পরিমান হারে বীজ প্রয়োজন, কোন ধরনের বীজ কত প্রয়োজন এবং বীজের চাহিদা ও সরবরাহ ও সিড রিপ্লেসমেন্ট রেট নির্ণয় করা সম্ভব হবে। এ কারণেই বীজের হালনাগাদ তথ্যভাণ্ডার দরকার।

প্রধান বীজ তত্ত্ববিদ মো. আজিম উদ্দিন বলেন, ‘২০১২ সালের দিকের একটি তথ্য আমাদের রয়েছে। পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য হালনাগাদ বীজ তথ্যভাণ্ডার করা হচ্ছে।’
গত ৮ নভেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয়ে সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সিড রিপ্লেসমেন্ট রেট নির্ধারণ সংক্রান্ত সভায় এই তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সিড রিপ্লেসমেন্ট রেট নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়, আগামী তিন মাসের মধ্যে অংশীজনের মত নিয়ে দানাদার, আলু, পাট, আখ, ডাল, তৈল, সবজি ও মসলা জাতীয় ফসলের আওতায় আবাদ করা জমির পরিমাণ, বীজ হার, বীজের কৃষিতাত্ত্বিক প্রয়োজন, মানসম্পন্ন বীজের সরবরাহ ও সিড রিপ্লেসমেন্ট রেট এর একটি পুর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়কে জমা দিতে হবে।

এছাড়া বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির প্রত্যায়ন করা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা মানঘোষিত বীজ সরবরাহের পরিমাণ হিসাবে আনতে হবে। মসলা ও আখবীজ উৎপাদন ও সরবরাহের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাস্তবসম্মত বীজ হার নিরুপণের জন্য চাষী পর্যায়ে সমীক্ষা চালিয়ে বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দিতে হবে।

সহকারী বীজতত্ত্ববিদ মুহাম্মদ নেয়ামুল নাসির বলেন, ‘বীজের গুণগত মান নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য হালনাগাদ বীজ তথ্যভাণ্ডার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কৃষক পর্যায়ে ইনফরমাল বীজের হার নিশ্চিত করা এবং বীজের পরিমাণ জানাসহ বিভিন্ন তথ্যের প্রয়োজনেই বীজ তথ্যভাণ্ডার করা হবে। এই বীজ তথ্যভাণ্ডার থেকে ডাটাবেইস হালনাগাদ করবে মন্ত্রণালয়।’