দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত, এটা আজ প্রমাণিত

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, সাম্প্রতিক সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ার প্রেক্ষাপটে এটাই প্রমাণিত হয়, দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রয়েছে এবং গণতন্ত্র শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল বুধবার নিজ কার্যালয়ে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সিলেটে বিএনপির প্রার্থীর জয়ী হওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাউন্সিলররাও বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। প্রতিটি এলাকার জনগণ ভোট দেওয়ার অধিকার অর্জন করেছে এবং ভোট দিয়ে তাদের মনোনীত প্রার্থীকে জয়যুক্ত করতে পারছে, এটাই আজ প্রমাণিত।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমরা সংগ্রাম করেছি। নির্বাচনে কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে। সেটাও আমরা সুনিশ্চিত করেছি। গণতন্ত্র মানে জনগণের ভোটের অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। সেই অধিকারের প্রতি আমরা সম্পূর্ণভাবে নিবেদিত। আমরা চাই জনগণের অধিকার জনগণের হাতেই থাকবে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব—স্লোগানটা আমারই ছিল, আপনারা জানেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কখনো কখনো ছোটখাটো ঘটনা ঘটে। যেখানেই ঘটে আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নিই। জনগণের মৌলিক অধিকার তারা প্রয়োগ করবে। তাদের মনমতো প্রার্থী নির্বাচিত করবে।’ তিনি বলেন, ‘যদি গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা থাকে তাহলে একটা দেশ উন্নত হয়, সমৃদ্ধিশালী হয় এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।’

‘সরকারের ধারাবাহিকতা আছে বলেই আজ আপনারা পরিবর্তন দেখতে পারছেন’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল।’

অনুষ্ঠানে প্রথমে রাজশাহীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে শপথ পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী। এরপর রাজশাহীর ৪০ ও সিলেটের ৩৬ জন কাউন্সিলরকে শপথ পাঠ করার স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা যে দলই করেন না কেন, আপনাদের সব সময় মাথায় এটাই রাখতে হবে যে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে হবে।’

এ সময় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নকাজের কথা তুলে ধরে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয় ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ার লক্ষ্যের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া ২১০০ সাল পর্যন্ত ডেল্টা প্ল্যানের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ কারণে যারাই ক্ষমতায় আসুক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা যেন বজায় থাকে, বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়, বাংলাদেশ যেন আর কখনো পিছিয়ে না যায়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আমি আশা করব, যে সরকারই আসবে শুধু নিজেদেরই ধনশালী, সম্পদশালী করবে না, জনগণ যেন ধনশালী, সম্পদশালী হয় সেদিকে নিবেদিত থাকবে, সেদিকেই দৃষ্টি দেবে।’

জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা নির্বাচিত প্রতিনিধি। জনগণ আস্থা রেখে আপনাদের ভোট দিয়েছে। যে যে দলই করেন না কেন, স্ব স্ব এলাকার ও জনগণের উন্নয়নই হবে আপনাদের কর্তব্য।’

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যে দলেরই হন না কেন সরকারপ্রধান হিসেবে তাঁদের সব রকমের সহায়তা করার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি এটাও বলব, যদি কোনো অনিয়ম হয়, যদি সেখানে কোনো ধরনের দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদী কাজ হয়, সে যে দলেরই হোক সে কিন্তু রেহাই পাবে না।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমরা দেশকে উন্নত করতে চাই এবং দেশের মানুষের শান্তি, উন্নয়ন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।’

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মন্ত্রিসভার সদস্যরা এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ রাজশাহী ও সিলেটের রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।