দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রাজশাহীর আম

তারেক মাহমুদ:
রাজশাহীর আম বলে কথা। রাজশাহীর আমের যে দেশ ব্যাপি বেশ কদর রয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। এবার রাজশাহী অঞ্চলে আমেরব বেশ ভাল ফলন হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন জাতের আমগুলো পাকা শুরু করেছে। তাই তো আমবিক্রেতারা ভ্যান গাড়িতে টুকরি বা ক্যরেটে সাজিয়ে নিয়ে আসছে হাটে। আর বিকিকিনিতে ব্যাস্তু সময় কাটাচ্ছে ক্রেতা বিক্রিতারা।

বলছিলাম রাজশাহীর বিখ্যাত আমের হাট বানেশ্বরের কথা। এই হাটটি দেখলে মনে হবে এখানে আমের মেলা বসেছে। খুব সকাল থেকেই এখানে আমের হাট বসে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে যায় হাটের চিত্র।

রাজশাহী ফল গবেষনা ইউনিস্টিউটের প্রধান কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন সিল্কসিটিনিউজকে জানান, রাজশাহীর আম বিদেশে রফতানি করা হচ্ছে। বর্তমানে রাজশাহীর আম আমেরিকা, জরমানি, ফ্রান্স, মলোয়েশিয়া, ডেনমার্ক, থাইল্যান্ডে যাচ্ছে।গত বছরের চেয়ে আমের দাম ভালো হওয়ায় সন্তুষ্ট বাগান মালিক ও ব্যাবসায়ীরা। সুস্বাদু ফরমালিনবিহীন রাজশাহীর সুমিষ্ট আম নিতে দেশের বিভিন্ন প্রন্তে থেকে ভিড় করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এই অঞ্চেলের এলাকাগুলোতে সারি সারি বাগান গুলোতে এবার ঝুলছে বিভিন্ন জাতের আম। আর পবিত্র রজানের দিকে তাকিয়ে অনেকে দাম বেশি পাওয়ার আশায় গাছ থেকে আম পাড়ার ধুম পড়েছে রোজার পর থেকেই।  জেলার সবচেয়ে বড় আমের হাট বানেশ্বেরে এবার গোপালভোগ, হিমসাগর, লোকনা, ল্যংড়া, দুধস্বর গুটি জাতের আমে ভরপুর।

ব্যবসায়ীরা সিল্কসিটিনিউজকে জানান, আম গুলো আসে পার্শবতী এলাকার বাঘা, পুঠিয়া, তাহেরপুর, নওহাটা, বাগমারা, দূর্গাপুর থেকে তবে কিছু আম চাপাইনবাবগঞ্জ ও নাটোর থেকে আসে। আকার ভেদে এবার প্রতিমণ গোপালভোগ ১৮০০ থেকে ১৯০০টাকা, হিমসাগর ১৮০০ থেকে ১৯০০টাকা ,লোকনা ৮০০ থেকে ১০০০, ল্যংড়া ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা, ও গুটি জাতের সকল আম ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে ২০ কিলোমিটারের ব্যাবধানে রাজশাহী নগরীর শালবাগান এলাকা ও সাহেব বাজারের আমের মোকাম গুলোতে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। এই সকল জাতের আম ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা বেশি দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে।
জানতে চাইলে হাটের ইজারাদার আনোয়ার হোসেন ও রাজু বলেন, পরিবহনের জন্যই এই ব্যবধান। এদিকে আম চাশিরা অভিযোগ করেন তাঁদের সীমিত লাভ হলেও মাঝখানে ফায়দা লুটছেন বড় ব্যাবসায়ীরা। বিক্রেতা সজল উদ্দিন জানান, এবার কাল বৈশাখী ঝড়ে আমের ব্যপক ক্ষয় ক্ষতির পর গাছে যে আম গুলো টিকে ছিলো এবার দাম ভালো থাকায় সেই আম দ্বারাই ক্ষতি পুশিয়ে নিয়েছে বাগান মালিকরা।

আম কিনতে আসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আনোয়ার ও তমা সিল্কসিটিনিউজকে জানায়, বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হয়েছে, দুই জনের বাসা ঢাকায় তাই বাসায় থেকে বলা হয়েছে, বাসায় যাবার আছে রাজশাহীর সুমিষ্ট আম নিয়ে যেতে। গোপাল ভোগ ও হিম সাগর কিনলাম তবে দাম এবার গতবারের থেকে একটু বেশি।

আরএফএল কম্পানিতে চাকুরিজীবি ক্রেতা শফিকুল সিল্কসিটিনিউজকে জানান, রাজশাহীর আম সারাদেশ ব্যাপী নাম করা এর স্বাদ সকল এলাকার আমের থেকে সুশ্বাদু এবং মিষ্টি তাই ছুটি পেয়ে পরিবারের জন্য আম কিনতে এসেছি।

রাজশাহী ফল গবেষনা ইউনিস্টিউটের প্রধান কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন সিল্কসিটিনিউজকে জানান, এবার ১৬ হাজার ৯শ ৬১ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৮১ হাজার ১০৭ মেট্রকটন আমের লক্ষমাত্রা ধরা হযেছে। আম ছোট থাকা অবস্থায় আমরা কৃষকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি ফলে এবার আমের ভালো ফলন হয়েছে, গত মে মাসের ২৫ তারিখ থেকেই কৃষরা গাছ থেকে আম পাড়তে শুরু করে জুন মাসের রমজানে আমের ভরা মৌসুম চলছে, রাজশাহীর সুমিষ্ট আম দেশের বিভিন্ন প্রান্তসহ্ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
স/আ